শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে নাঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: সোমবার, ২২ আগস্ট ২০২২, ০২:২২ রাত | অনলাইন সংস্করণ
বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে নাঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ছবি । সংগৃহীত

নির্বাচন নিয়ে এখন বিএনপি ভাবছে না বলে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের দাবি একটাই- এ সরকার কবে যাবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং জ্বালানি তেলসহ  দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ও ভোলায় পুলিশের গুলিতে  ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ইউনিভার্সিটি  টিচার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) আয়োজিত  মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের কথা বাদ দিয়ে সবাই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেন। আন্দোলন করেই সবার আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেয়া  মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি বলেন, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এ ছাড়া সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করে  জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার ও সংসদ গঠন করতে হবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ জনদৃষ্টি বিভিন্ন কৌশলে অন্যদিকে নিতে চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে তারা তাদের অপকর্ম ও  দুর্নীতি থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের মূল সঙ্কট একটা, সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগ বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসে বসে আছে। তাই এই আওয়ামী লীগকে আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে সরানো আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসে এ সরকারকে হটিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ফখরুল বলেন, একটি গণমাধ্যমে পরিষ্কার করে উঠে এসেছে- গোয়েন্দা সংস্থা পরিচালিত আয়না ঘর নামে একটি টর্চার সেল আছে, সেই সেলে আমাদের নেতাকর্মীদের  ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, টর্চার করা হয় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।  কাউকে সেখানে মেরে ফেলা হয় আবার কাউকে কাউকে বছরের পর বছর সেখানে রেখে দেয়া হয়। যারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন তাদের ভাগ্য ভাল। তারা বের হয়ে এসে  এখন কথা বলতে শুরু করেছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশকে স্থায়ীভাবে একটি অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। এটা আমার কথা নয়, এটা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কথা; যিনি গণতন্ত্রের জন্য আজও বন্দী হয়ে আছেন। তিনি বলেছিলেন, সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে বাংলাদেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে জনগণকে ভোট দেয়ার জন্য লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই তারা আমাদের স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে। এর জন্য আওয়ামী লীগকে অবশ্যই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, জিয়াউর রহমানের নাকি বাইরে মুক্তিযোদ্ধার পোশাক ছিল,  ভেতরে নাকি ছিল পাকিস্তানী চর।  আমি ধিক্কার জানাই যারা জিয়াউর রহমানের ভূমিকাকে অস্বীকার করে। 

ফখরুল বলেন, দেশে এখন এলিট শ্রেণী হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, তাদের মন্ত্রী, এমপি, ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। আর আমলাও কিছু আছেন যারা প্রতিদিন প্রজেক্ট  তৈরি করছেন- কিভাবে তাদের সম্পদ আরও বৃদ্ধি পাবে। কানাডার বেগমপাড়ায় তাদের আরও বাড়ি  তৈরি হবে। আরও আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী শিক্ষক ও কিছু বুদ্ধিজীবী। তারা যখন টক শোতে কথা বলেন মনে হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন বলেছেন বেহেস্তে আছি, তেমনটা যেন; অমূলক কথা নয়। তারা প্রমাণ করতে চান আসলেই দেশের মানুষ বেহেস্তে আছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে মানুষের কোন সম্পর্ক নেই। তারা অন্য দেশের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এর প্রমাণ- পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি ভারত সরকারকে বলেছেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে। তারা এই কথাই বলতে চান যে, ভারত সরকারের অনুকূলেই এ সরকার টিকে আছে। মানববন্ধনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ।

আমাদের পূর্বপুরুষরা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে লড়াই করেছেন। ভারত স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্র চর্চা করেছে। আমার বিশ্বাস ভারত সেই ভুল করবে না। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারত সুজাতা সিংকে পাঠিয়ে নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদকে রাজি করানোর বিষয়টি সারাবিশ্ব দেখেছে। এতে কিছুটা হলেও গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ড. মোরশেদ হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন শ্যামল।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ