আবদুল মালেক উকিল পরিবারকে আ.লীগে মূল্যায়নের দাবি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
|
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার আবদুল মালেক উকিলের পরিবারের সদস্যারা বিভক্তি ভুলে একসঙ্গে মাঠে কাজ করছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্ব-পরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর কারা মুক্ত হয়ে ১৯৭৮ সালে রমনা পার্কে প্রথম জনার্কীণ সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যার বিচার চাওয়া আবদুল মালেক উকিল দলের দুঃসময়ে ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালের ১৭ অক্টোবর আবদুল মালেক উকিলের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারসহ নোয়াখালীর আওয়ামী রাজনীতিতে নেমে আসে অন্ধকার। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের জ্যেষ্ঠ পুত্র গোলাম মহি উদ্দিন লাতুকে নোয়াখালী—৪ আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছেন। এখানে দল—মত নির্বিশেষে আবদুল মালেক উকিলের জনপ্রিয়তা থাকলেও দলের ঐক্যের অভাবে গোলাম মহি উদ্দিন লাতু তখন নির্বাচিত হতে পারেননি। তাঁদের পরিবারেও ছিল দ্বিধা বিভক্তি। ফলে দীর্ঘদিন আবদুল মালেক উকিল পরিবারের সদস্যরা অনেকটা উপ্রেক্ষিত হয়ে রয়েছেন। জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিল পরিবার থেকে রাজনীতিতে দক্ষ কোন নেতা তৈরী না হলেও বর্তমানে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে রাজনীতির মাঠে অবস্থা করে নিয়েছেন ছাত্র ও যুবলীগের রাজনীতিতে সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন। ইত্যেমধ্যে শাহিন তাঁর সততা ও যোগ্যতায় নোয়াখালীর রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছেন। বর্তমানে শিহাব উদ্দিন শাহিনকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন মালেক পরিবার। এবার পারিবারিক সকল দ্বিধা বিভক্তি ভুলে একসঙ্গে মাঠে কাজ করছেন আবদুল মালেক উকিলের জ্যেষ্ঠ পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম মহি উদ্দিন লাতু ও কনিষ্ঠ পুত্র সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন এবং তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস জাহের। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করাতে নোয়াখালী—৪ (সদর—সুবর্ণচর) আসনের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা নিয়ে গত কয়েক মাস যাবৎ সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ করেছেন মালেক পরিবারের সদস্যরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী—৪ আসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর আবদুল মালেক উকিল পরিবার থেকে যেকোন সদস্যকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়নের দাবি তোলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে মরহুম আবদুল মালেক উকিলের ভ্রাতুষ্পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন নোয়াখালী—৪ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করে কেন্দ্র ভিত্তিক দলীয় বলয় তৈরী করেছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা নিয়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে, চেয়েছেন নৌকায় ভোট। তাঁর এসব দলীয় কর্মকান্ডে সহযোগিতা করেছেন আবদুল মালেক উকিল পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা। সর্বশেষ গত ১৫ আগস্ট জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে শিহাব উদ্দিন শাহিন ব্যক্তিগত অর্থায়নে নোয়াখালী—৪ আসনের প্রত্যেক ওয়ার্ডে দলীয় কার্যালয়ে গরু ও নগদ টাকা বিতরণ করে কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করে। যা পুরো জেলায় আলোচনায় আসে। আবদুল মালেক উকিলের কনিষ্ঠ পুত্র সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন বলেন, আমার বাবা আবদুল মালেক উকিল ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। তবে জাতির পিতা যেভাবে বাবাকে (মালেক উকিল) তাঁর ¯েœহে আগলে রাখতেন, ঠিক তেমনি তাঁর সুযোগ্য কন্যাও আমাদেরকে ¯েœহ—মমতায় আগলে রেখেছেন। আমাদের সুখে—দুঃখে সবসময় খোঁজখবর নিয়েছেন। আমরাও আজীবন তাঁর ভরসার ছায়াতলে থাকতে চাই। বাহার উদ্দিন খেলন আরো বলেন, সদর ও সুবর্ণচর উপজেলা নিয়ে নোয়াখালী-৪ আসনটি গঠিত। নেত্রী সুবর্ণচরে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানিয়েছেন। আর সদরে আমার আরেক চাচাতো ভাই আবদুস জাহের সভাপতি। সদর—সুবর্ণচরে এখনো আমার বাবাকে ভালবাসে এমন ৭৫ শতাংশ ভোটার রয়েছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে চাওয়া হলো, যেহেতু আমার ভাই শিহাব উদ্দিন শাহিন রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে আছে, সেই ক্ষেত্রে তাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা। আমরা নৌকাকে বিজয় করে আনবো, ইনশা-আল্লাহ। আবদুল মালেক উকিলের ভ্রাতুষ্পুত্র সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস জাহের বলেন, এক সময় কিছুটা ভুল বুঝাবুঝি থাকলেও আমাদের পরিবারে এখন আর সেই ভুল বুঝাবুঝি নাই। এখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। তাই আমরা পারিবারিকভাবে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করবো আবদুল মালেক উকিলের সম্মান রক্ষার্থে নোয়াখালী—৪ আসনে শিহাব উদ্দিন শাহিনকে যেন দলীয় মনোনয়ন প্রদান করা হয়। আবদুল মালেক উকিলের আরেক ভ্রাতুষ্পুত্র শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, আমি স্কুল জীবন থেকেই চাচা আবদুল মালেক উকিলের ¯েœহ ও সান্নিধ্যে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সুদীর্ঘ ৪৩ বছর ছাত্র ও যুবলীগের রাজনীতি শেষ করে আমাদের মাতৃতুল্য নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর—সুবর্ণচরের মানুষ পরিবর্তন চায়। সেই নিরীক্ষে জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং দেশরতœ শেখ হাসিনার ধারাবাহিক উন্নয়ন ও নেতৃত্বে প্রতি অবিচল আস্থা রেখে সর্ব সাধারণ আমাকে নোয়াখালী—৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। তিনি বলেন, আমি বিশ^াস করি নেত্রী যদি আমাকে এই আসনে মনোনয়ন দেয়, তাহলে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভোটে নৌকা মার্কার জয় সুনিশ্চিত হবে। আর যদি আমাকে এখানে মনোনয়ন নাও দেয়, তার পরও আমি নৌকার জয় নিশ্চিত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করে যাবো। জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের জেষ্ঠ্য পুত্র গোলাম মহি উদ্দিন লাতু বলেন, আমাদের পারিবারিক কোন দ্বিধা বিভক্তি নাই। মানুষ আমাদের মধ্যে বিভক্তি তৈরী করানোর চেষ্টা করে। আমি এখানে দুইবার ভোট করেছি, সঙ্গত কারণে নির্বাচিত হয়নি। এখন আমরা আওয়ামী লীগ থেকে আমাদের পরিবার থেকে একজনকে চাই। আমাদের পরিবার থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে, আমরা তাকেই নির্বাচিত করে আনতে পারবো। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ |