বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলঙ্কা হবে না, বিএনপির আমলে হয়েছিলঃ প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:
|
বিএনপির আমলেই বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না। শ্রীলঙ্কা যদি হয়, সেটা বিএনপির আমলে হয়েই গেছে।’ বিএনপির শাসনামলে জনদুর্ভোগের বিষয় তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিদ্যুৎ-পানির সংকট এবং সন্ত্রাস ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল তখনকার বাংলাদেশ। তখন মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে যে ভয়াবহ দিকে নিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আজকে আমরা সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছি। এটা না করলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় আরও সমস্যায় পড়তে হতে পারে।’ ‘অপচয় রোধ করতে হবে। সীমিত করতে হবে সব। এই যুদ্ধের (রাশিয়া-ইউক্রেন) ফলে পৃথিবী আরও ভয়াবহ অবস্থায় যাবে। নিজেদের যার যতটুকু জায়গা আছে, কাজে লাগাতে হবে। নিজের খাদ্যের জোগান যেন নিশ্চিত করা যায়।’ বাংলাদেশের অবস্থা অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে যেকথা বলা হচ্ছে সেবিষয়ে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না। শ্রীলঙ্কা যদি হয়, সেটা বিএনপির আমলে হয়েই গেছে। বিদ্যুৎ-পানির সংকট এবং সন্ত্রাস ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল তখনকার বাংলাদেশ। তখন মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল।’ তার সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোর বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ পরিকল্পনামাফিক। যে প্রকল্প মানুষের কাজে লাগবে, দেশের কল্যাণে আসবে, ফিডব্যাক আসবে—তেমন প্রকল্পই নিয়েছি। আমরা ধার করে ঘি খাই না।’ দেশে-বিদেশে বসে বিরুদ্ধাচারণ করছে কারা প্রশ্ন রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘দেশে-বিদেশে অনেকে বিরুদ্ধাচরণ করছে। তারা কারা? যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তান, পঁচাত্তরের খুনি ও তাদের সন্তান বা স্বজন এবং কিছু অপরাধী, যারা অপরাধ করে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে।’ বিদেশে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে দলটির আহ্লাদের আর শেষ নেই বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিএনপির আন্দোলনের বিষয়টি টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারা নিজেদের স্বার্থে আন্দোলন করে, এখনো করছে। বলে খালেদা জিয়া অসুস্থ, বিদেশে পাঠাও। আহ্লাদের আর শেষ নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি (খালেদা জিয়া)। কিন্তু বয়োজ্যেষ্ঠ, অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না। তাই আমি আমার ক্ষমতাবলে তাকে বাড়িতে থাকার অনুমতি দিয়েছি।’ ‘এখন তিনি (খালেদা জিয়া) সাজুগুজু করে হাসপাতালে যান। আবার ডাক্তাররা রিপোর্ট দেয়, তার অবস্থা খারাপ। লিভার পচে গেছে। কী খেলে লিভার পচে, সেটা আমি মুখ দিয়ে বলতে চাই না, সবাই জানে।’ তার ওপর বারবার হামলার বিষয়টি তুলে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার কাছে কোন মুখে চায়? বার বার আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমার নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে।’ ‘তারপরও আমি তো তার (খালেদা জিয়া) ছেলে কোকো মারা যাওয়ার পর গিয়েছিলাম সান্ত্বনা দিতে। মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও তার প্রতি অনেক দয়া দেখানো হয়েছে। আর দয়া দেখানো সম্ভব না।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি। বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, দক্ষিণের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, শহীদ সেরনিয়াবাত, উত্তরের সহ-সভাপতি সাদেক খান, এম এ কাদের খান প্রমুখ।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |