নূরের দলে রেজা কিবরিয়া, নেই জাফরুল্লাহ
নিউজ ডেস্ক:
|
পিছিয়ে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূরের রাজনৈতিক দল গড়ার ঘোষণা। নতুন সে দলে থাকছেন গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করা নেতা ড. রেজা কিবরিয়া। এতে থাকছেন না গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের মধ্য দিয়ে করতে চান বলে জানিয়েছেন নূর। এ বিষয়ে রেজা কিবরিয়া জানান, তিনি নুরের নতুন দলে থাকছেন। এটা চূড়ান্ত। তবে নেতৃত্বে আসছেন কি না, তা এখনও চূড়ান্ত নয়। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে নজরে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুল হক নূর। এরপর ওই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন করে ভিপি পদে জয়ী হন তিনি। ডাকসুর ভিপি পদের মেয়াদ শেষ হলে নিজে একটি রাজনৈতিক দল করার ঘোষণা দেন তিনি। নুরুল হক নূর এরই মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক অধিকার পরিষদ, প্রবাসীদের নিয়ে প্রবাসী অধিকার পরিষদ এবং সবশেষ পেশাজীবীদের নিয়ে পেশাজীবী অধিকার পরিষদ গঠন করেন। বেশ কিছুদিন ধরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলন ও অরাজনৈতিক সংগঠন রাষ্ট্রচিন্তার সঙ্গে নূরের নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোকে একত্রে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসছে না জানিয়ে নূর বলেন, ‘আমাদের চিন্তা ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর ঘোষণা দেয়া হবে। আমরা চাচ্ছিলাম, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে একটি জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলের ঘোষণা হোক। সে জন্য আমরা প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন তো বাইরে প্রোগ্রাম করার জন্য আপাতত অনুমতি দিচ্ছে না। যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের ঘোষণা, এ জন্য আমরা তাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে প্রোগ্রাম করতে চাই না। এ জন্য আমরা একটু হয়তো পেছাচ্ছি। অক্টোবরের শুরুর দিকে আমরা ভাবছি।’ নূর জানান, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল ঘোষণা করতে চান। সেভাবেই অনুমতি চাইবেন। যদি অনুমতি না দেয়া হয়, তাহলে কোনো ইনডোর মিলনায়তনে তারা অনুষ্ঠান করবেন। নতুন রাজনৈতিক দলের নাম কী দিচ্ছেন জানতে চাইলে নূর বলেন, “আমাদের দুটি সম্ভাব্য নাম রয়েছে, যার একটি গণ-অধিকার পরিষদ, অন্যটি বাংলাদেশ অধিকার পার্টি। আর আমাদের সম্ভাব্য স্লোগান হলো ‘জনতার অধিকার আমাদের অঙ্গীকার’। এই স্লোগানটিও আলোচনায় আছে। এখন আমরা কোনো কংক্রিট সিদ্ধান্তে যাইনি। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই আমরা নাম ও স্লোগান চূড়ান্ত করব।” সুপরিচিত কোনো রাজনৈতিক মুখকে তার দলে দেখা যাবে কি না জানতে চাইলে নূর বলেন, ‘আমরা তারুণ্যের প্রতিনিধিত্ব করি, আমরা দলকে যে ফরম্যাটে ভাবছি, সেভাবে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। আহ্বায়ক হিসেবে আলোচনায় আছেন রেজা কিবরিয়া, রাষ্ট্রচিন্তার নেতা হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের নেতা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল। আর সদস্যসচিব হিসেবে আমি ছাড়াও আরও কয়েকজনের নাম আলোচনায় রয়েছে, যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। তবে আহ্বায়ক আমরা একজন সিনিয়র নাগরিককেই করব।’ গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দলে কোনো পদে থাকছেন কি না জানতে চাইলে নূর বলেন, ‘স্যার ওইখানে আমাদের রাজনৈতিক দলে সরাসরি থাকবেন না। দেশের বিভিন্ন সংকটে উনি যেভাবে পরামর্শ দেন, আমাদেরও সেভাবেই উনি পরামর্শ দেবেন। আমরা মনে করি, তিনি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান।’ নূর জানান, তাদের পাঁচটি অঙ্গ সংগঠন রয়েছে। সেগুলো হলো ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদ ও দেশের বাইরে প্রবাসী অধিকার পরিষদ। এই পাঁচটি অঙ্গসংগঠনে যারা কাজ করছে, তাদের পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার নাগরিকরা তাদের রাজনৈতিক দলে থাকছেন। পাশাপাশি কিছু অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা দলে যোগ দিতে পারেন। নূরের নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আসছেন কি না জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘এটা এখন চূড়ান্ত হয়নি। আমি নেতৃত্বে থাকব কি না, এটা তো আমি চূড়ান্ত করব না। তবে আমি ওদের (নূর) সঙ্গে থাকছি, এটা কনফার্ম (নিশ্চিত)।’ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে তাকে নিয়ে দলের এক অংশের আপত্তির কারণে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দল ছাড়তে এক প্রকার বাধ্য হন রেজা কিবরিয়া। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেন। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বোমা হামলায় নিহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |