বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

১৫ বিঘা জমির ধান কীটনাশক দিয়ে পুড়ে দিলো প্রভাবশালীরা
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ২০২২, ০২:২৫ রাত | অনলাইন সংস্করণ
১৫ বিঘা জমির ধান কীটনাশক দিয়ে পুড়ে দিলো  প্রভাবশালীরা

ছবি । সংগৃহীত

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগরে প্রায় ১৫ বিঘা জমির আমন ধান ক্ষেতে বিষাক্ত কীটনাশক দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকার প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে ওই জমি ১৪ জন বর্গাদারের প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন এসব কৃষক।

গতকাল রোববার (৯ অক্টোবর) রাতে উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নে নেহেন্দা মৌজায় এ ঘটনা ঘটে। ওই জমির মালিক খালেকুজ্জামান তোতা একই ইউনিয়নে চন্দননগর গ্রামের বাসিন্দা।

জানা যায়, খালেকুজ্জামান তোতা ক্রয় সূত্রে ১৯৬১ সাল থেকে ৭৪ একর জমি ভোগদখল করে আসছিলেন। তার এসব জমি স্থানীয় বিভিন্ন কৃষক বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। চন্দননগর ইউনিয়নের নটিপুকুর গ্রামের মৃত সখাতুল্লার ছেলে আব্দুস সামাদ গং ওই জমি নিজের দাবি করে আরএস খতিয়ান সংশোধনের জন্য ২০২১ সালে নওগাঁ তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। 

এরপর থেকেই আব্দুস সামাদ গংরা ওই জমি চাষাবাদের জন্য ভোগদখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু চলতি আমন মৌসুমে বর্গাদাররা জমিতে ধান রোপন করায় আব্দুস সামাদ গংরা জমি থেকে কাউকে ধান উঠাতে দেবে না বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেন খালেকুজ্জামান তোতা।

তোতা বলেন, ওই জমির কিছু অংশে ধান বেরিয়েছে এবং আরও কিছু অংশে বেরোনোর অপেক্ষায়। আগামী একমাস পর সব ধান ঘরে ওঠার কথা ছিল। রোববার বিকেলে সব ধান রোদে চকচক করছে ফোনে এমন খবর পেয়ে ধান ক্ষেতে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে দেখি আগাছা দমনে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করায় ধান পুড়ে গেছে। সেখানে চিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। এতে করে ১৪ জন বর্গাদার পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা মৃত খবির উদ্দিন আহম্মেদ ১৯৬১ সালে ১৩ জুন পূর্নচন্দ্র সাহা এর কাছ থেকে ৪.৭৪ একর জমি ক্রয় করে। সেই সূত্রে আমি ও আমার ছোট ভাই সেই জমি মালিক। আমার ছোট ভাই মারা যাবার পর পুরো সম্পত্তির মালিক আমি। কিন্তু গত কয়েক বছর ওই জমি নিজেদের দাবি করে নটিপুকুর গ্রামের আব্দুস সামাদ গংরা বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। এ কারণেই গত রোববার রাতের কোনো এক সময় ওই জমিতে থাকা ধান বিষাক্ত কীটনাশক দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে সে।

চন্দননগর গ্রামের বর্গাচাষিরা বলেন, গত তিন-চার বছর থেকে আমরা খালেকুজ্জামান তোতার কাছ থেকে ১৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছি। আর একমাস পর ধান ঘরে উঠার কথা ছিল। কিন্তু এখন সবগুলো ধান পুড়ে গেছে। সেখানে শুধু খড় হবে। আমাদের প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বলেন, কে কখন কীভাবে কীটনাশক দিয়েছে তার দায়-ভার আমার ওপর চাপালে তো হবে না। আগে সেটা প্রমাণ করতে হবে। ওই জমি একসময় আমাদের দখলে ছিল কিন্তু খালেকুজ্জামান তোতা এখন জোর করে ওইজমি দখল করে ভোগদখল করছে।

চন্দননগর ইউনিয়নের চন্দননগর ব্লকের উপসহকারী ইমরান হোসেন বলেন, ওই জমিতে আগাছা পরিষ্কার করার বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে। এতে প্রায় ৯০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে জমির মালিক খালেকুজ্জামান তোতা গতকাল রাতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ