বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি যত দিন থাকবে তত দিন সংঘাত-অশান্তির অবসান হবে নাঃ ইনু
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৫৩ রাত | অনলাইন সংস্করণ
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি যত দিন থাকবে তত দিন সংঘাত-অশান্তির অবসান হবে নাঃ ইনু

ছবি । সংগৃহীত

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি যত দিন রাজনীতির মাঠে থাকবে, তত দিন দেশের রাজনীতির অস্থিরতা-সংঘর্ষ-সংঘাত-অশান্তির অবসান হবে না। তিনি বলেন, বাংলা-বাঙালি-বাংলাদেশ-মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতার বিপক্ষের অপশক্তি ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রুদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত-দমন-ধ্বংস করেই রাজনীতি ও সমাজে স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে হবে।

শনিবার সকালে ফেনীতে অনুষ্ঠিত জাসদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জেলা জাসদের সভাপতি নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে শহরের ট্রাংক রোডের একটি কনভেনশন সেন্টারে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার।

ইনু বলেন, দেশের রাজনীতির বর্তমান অস্থিরতা, সংঘাত ও সংঘর্ষ নতুন নয়, এটা '৫২, '৭১ ও '৭৫-এর পুরাতন বিরোধের বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, '৫২ ও '৭১-এ মীমাংসিত বিষয়গুলোকে অমীমাংসিত করা ও ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করার রাজনীতির মাধ্যমে পরাজিত শক্তি এই বিরোধের জাগিয়ে তুলেছে। ১৯৭৫ সাল থেকে মুশতাক-জিয়া এই  '৫২ ও '৭১ বিরোধী, বাংলা-বাঙালি-বাংলাদেশ-স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজে চাপিয়ে দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে বিরোধের রাজনীতিকে স্থায়ী রূপ দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতসহ ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদী, উগ্রবাদী শক্তিগুলো এই বিরোধের রাজনীতির ধারক ও বাহক। এরা বাঙালির আত্মপরিচয়, ভাষা, সংস্কৃতি, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধান মানে না। এরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহনীর গণহত্যার পক্ষে, রাজাকার-আলবদর-যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পক্ষে সাফাই গায়। এরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক ধারাকে নিশ্চিহ্ন করতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কর্নেল তাহেরকে হত্যা করেছে ও শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে দমন করতে হবে। এসব শেখ হাসিনার একার ক্ষমতায় থাকার বিষয় নয়, শেখ হাসিনার একার লড়াই না; বরং সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রু পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামাতসহ ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক-জঙ্গীবাদী-উগ্রবাদী শক্তিকে বর্জন ও ধ্বংস করার দায়িত্ব নিতে হবে। সমগ্র জাতিকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশ আফিগানিস্তান-পাকিস্তানের মত তালেবানি পথে যাবে, নাকি ধর্মের নামে সংঘাত-সংঘর্ষ-অশান্তি-খুনাখুনি-রক্তারক্তির পথে যাবে, নাকি শান্তি-স্থিতিশীলতা-উন্নয়নের পথে যাবে?  

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রুদের বর্জন ও পরাজিত করার রাজনৈতিক সংগ্রামের সাথে সাথে সমানতালে-সমান্তরালে জনগণের দৈনন্দিন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর করা, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক-অযৌক্তিক উর্ধগতি রোধ করতে বাজার সিন্ডিকেট দমন, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের দমন, দলবাজী ও ক্ষমতাবাজী বন্ধ এবং বৈষম্যের অবসান করতে বাংলাদেশকে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে হবে।

বিশেষ অতিথির ভাষণে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, দেশ ও জাতির চিরশত্রু এবং নারীর চিরশত্রু ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক-উগ্রবাদী-জঙ্গীবাদী অপশক্তি মোকাবেলার ঐক্য ও জোটের রাজনীতির পাশাপাশি জাসদের নিজস্ব একটি সুনির্দিষ্ট রাজনীতি আছে। জাসদের রাজনীতি হচ্ছে বৈষম্যের অবসান করা এবং দেশ ও বাজেটের সম্পদ সমাবেশ ও বিলিবন্টনে বঞ্চিত-অসহায়-নিরুপায়-কর্মহীন-আয়হীন নারী পুরুষকে অগ্রাধিকার দেওয়া।  

তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির যে সক্ষমতা ও জাতীয় বাজেটের যে আকার, দেশের অর্থসম্পদ সঠিক ও দুর্নীতিমুক্ত ভাবে বিলিবন্টন হলে এই বঞ্চিত অবহেলিত মানুষকে মানবিক জীবনে টেনে তোলা সম্ভব। সেটা করার জন্য সংবিধানের দুই মলাটে ছাপার হরফে বন্দি সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক পরিকল্পনা নীতি ও বাজেট প্রণয়নের নীতির ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। জাসদ এই বক্তব্য ও কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ও সংসদে সমাজতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার আছে। জাসদ সমাজতন্ত্র ও সুশাসনের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ধারণ করেই দলের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে।

ফেনী জেলা জাসদের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে এবং জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ প্রতিনিধি সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন, মীর হোসাইন আখতার, সহ-সভাপতি নুরুল আকতার, বীরমুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম প্রমুখ।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ