রাত ১টার দিকে চট্টগ্রামে টিসিবির পণ্য পাচারের সময় একটি ট্রাক জব্দ
নিউজ ডেস্ক:
|
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গভীর রাতে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যের পণ্য নেওয়া হচ্ছিল মুদি দোকানে। খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মো. মাহমুদুল হাসান অভিযান চালিয়ে ট্রাকভর্তি এসব পণ্য উদ্ধার করেন। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১টার দিকে বাঁশখালী থানার সাধনপুর ইউনিয়নের পূর্ব বৈলগাঁও এলাকার আলম স্টোরের সামনে থেকে এসব পণ্য উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা পণ্যের মধ্য রয়েছে- ৬৪০ লিটার সয়াবিন তেল, ৩২০ কেজি চিনি ও ৬৫০ কেজি ডাল। এসময় রেজিস্ট্রেশনবিহীন মিনিট্রাকও জব্দ করে প্রশাসন। উদ্ধার হওয়া পণ্য টিসিবির নিয়োগ করা ডিলার মেসার্স আমান অ্যান্ড ব্রাদার্সের বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তবে টিসিবির ডিলার মেসার্স আমান অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী আমান উল্লাহ চৌধুরী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বাঁশখালীর ১৫ ইউনিয়নে ৫ ডিলারকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমার এরিয়া হচ্ছে খানখানাবাদ, বাহারছড়া, শেখেরখীল এবং কাথরিয়া ইউনিয়নে। যেসব পণ্য আটক হয়েছে সেগুলো আমার নয়। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমি মঙ্গলবার বাহারছড়া ইউনিয়নে বিক্রি করেছি। ওখানে ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন ও আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যেসব পণ্য আটক হয়েছে সেগুলো আমার নয়। আমি সাধনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। একটি পক্ষ আমাকে ঘায়েল করার জন্য অন্যের পণ্য আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। আমরা স্থানীয়ভাবে দলীয় রাজনীতিতেও কোণঠাসা। আমি মঙ্গলবার যেসব পণ্য ছাড়িয়েছি এবং বিক্রি করেছি, তার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে আমি সাধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে দেখিয়েছি। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় আওয়ামী যুব মহিলা লীগের নেত্রী হিরামণি জব্দ হওয়া টিসিবির পণ্য ছাড়িয়ে নিতে দেনদরবার করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টিসিবির পণ্যগুলো বহন করছিলেন তারই মামাতো ভাই মারুফ। এ বিষয়ে হিরামণি বুধবার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, মারুফ আমার কোনো আত্মীয় নন। তিনি উপজেলায় একটি কাজে আমাকে সহযোগিতা করেছিলেন। তাতে তার (মারুফ) সঙ্গে আমার পরিচয়। মারুফ আচারের ব্যবসা করতেন। রাতে তিনি আমাকে ফোন করে বললেন তার মাল আটকিয়েছে স্থানীয় কিছু সাংবাদিক। আমি আচারের পণ্য মনে করে ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কথা হয়নি। টিসিবির পণ্য হলেতো আমি নিজেই পুলিশে ধরিয়ে দিতাম। যখন শুনেছি এগুলো টিসিবির পণ্য, তখন মারুফ যে নাম্বার থেকে আমাকে ফোন করেছিলেন, সেই নম্বরে আবার ফোন দেই। তবে তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মো. মাহমুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিনগত রাতে পূর্ব বৈলগাঁও এলাকা থেকে এক ট্রাক টিসিবির পণ্য জব্দ করেছি। এসময় টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকটিও জব্দ করা হয়। টিসিবির পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করা হয়। মালামালসহ জব্দকৃত ট্রাক বাঁশখালী থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। জব্দ করা টিসিবির পণ্যের সঙ্গে যুব মহিলা লীগ নেত্রীর সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা স্থানীয়ভাবে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকটি আটকিয়েছিলেন, তারাই বলেছেন হিরামণি নামের একজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে পণ্য যারই হোক না কেন, যেহেতু এগুলো টিসিবির পণ্য এবং খোলাবাজারে ভর্তুকিমূল্যে বিক্রির কথা। সেহেতু যারাই এ ঘটনায় জড়িত থাকবে তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |