নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ঘোড়াও হাসবেঃ মির্জা ফখরুল
নিউজ ডেস্ক:
|
সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের ‘হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য’ পতাকাসংবলিত বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের জোড়পুকুর মাঠের সামনে আজ মঙ্গলবার সমাবেশ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এর আগে পল্লবীসহ বেশ কয়েকটি সমাবেশে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা এভাবে সমাবেশে আসছেন বলে জানিয়েছেন। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, এটা তাঁদের দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। নেতাকর্মীরা নিরাপত্তার জন্য নিজেরাই এটা করছে। সমাবেশে বিএনপি নেতারা আঘাত এলে প্রত্যাঘাতের ঘোষণা দিয়েছেন। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিবিসিকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, বিবিসিকে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যে ঘোড়াও হাসবে। দেশের মানুষ জানেন, তাঁর আমলেই সব ভুয়া নির্বাচন হয়েছে। বিকেলে খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানার যৌথ উদ্যোগে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দলের তিন নেতাকে হত্যা ও সারাদেশে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশ করে বিএনপি। দুপুর পৌনে ২টা থেকেই বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে অংশ নেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ নেতাকর্মীর হাতে বাংলাদেশের পতাকা টাঙানো লাঠি ছিল। কারও হাতে বাঁশের লাঠি, কারও হাতে প্লাস্টিকের পাইপের লাঠি দেখা গেছে। এর আগে সোমবার মহাখালীতেও লাঠি নিয়ে সমাবেশ করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক জানান, নেতাকর্মীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্রতিটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকারদলীয়রা হামলা করছে। তাই হয়তো নেতাকর্মীরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য লাঠি নিয়ে সমাবেশে আসছেন। তবে এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। ১১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর ১৬টি স্থানে সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপি। এখন পর্যন্ত ১০টি স্থানে সমাবেশ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে পল্লবী, উত্তরা ও বনানীতে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা ও হামলা চালিয়েছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। তবে আজ খিলগাঁওয়ের সমাবেশে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এদিন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সমাবেশের আশপাশে কোথাও দেখা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর ছিল। সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করছে, কোটি কোটি টাকা পাচার করছে। লুটপাটকারীরা বিদেশে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। আর দেশের মানুষকে তারা হত্যা করছে। কিন্তু এভাবে লুটপাট করে, নির্যাতন করে, গুম-খুন করে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। আজকেও তারা জেগে উঠছে। দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। সভা-সমাবেশের অনুমতি দিতে প্রশাসন গড়িমসি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই দেশ কারও বাবার রাজত্ব নয়। দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে। এই সরকারই শেষ সরকার নয়। এরপরও কিন্তু সরকার আসবে। আপনাদের ছবিও প্রিন্ট করা আছে, ভিডিও করা আছে, রেকর্ড করা আছে। তিনি বলেন, এখন থেকে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপরে আঘাত এলে প্রত্যাঘাত করা হবে। মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধার সভাপতিত্বে সমাবেশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, হাবিবুর রশিদ হাবিব, লিটন মাহমুদ, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |