শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ আ'লীগের সম্মেলন নভেম্বরে
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২, ০৬:২২ বিকাল | অনলাইন সংস্করণ

আওয়ামী লীগ জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম এবং ঢাকা মহানগর শাখার সম্মেলন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ। তার আগে সেপ্টেম্বর থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং নভেম্বরে আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার সম্মেলনের কথা ভাবছেন দলটির হাইকমান্ড। 

এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে এরইমধ্যে এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনাও দিতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন-দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে দল ও সহযোগী সংগঠনকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত শক্তিশালী করতে চান তারা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্লেন (অব.) ফারুক খান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আমাদের জেলা-উপজেলা সম্মেলন করে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে আমাদের জাতীয় সম্মেলনের আগেই আমরা সব মেয়াদোত্তীর্ণ শাখার সম্মেলন শেষ করত পারব।

সেই সঙ্গে আমাদের দলের যেসব সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের সম্মেলনও আমরা করে ফেলব। এর মধ্য দিয়েই আমাদের জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করছি।

২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের তিন বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখার সম্মেলন শেষ করতে চায় দলটি।

গত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তিন মাসের ‘আলটিমেটামের পর সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জোরেশোরে কাজ শুরু করেন। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা উপজেলার সম্মেলনের পাশাপাশি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজও চলছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কেন্দ্র থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

গত ২ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও সদস্য নবায়ন অনুষ্ঠানে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধু আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনেরও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সম্মেলন জাতীয় নির্বাচনের আগে শুধু আমাদের দলের সংগঠন নয়, শাখা সংগঠন নয়, আমাদের সহযোগী সংগঠন যাদের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে তাদেরও সম্মেলন অনুষ্ঠান করতে হবে। তাদেরও এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সে অনুযায়ী তিন বছর মেয়াদি বর্তমান কমিটির সময় আগামী ২৯ নভেম্বর শেষ হবে।

দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগে বেহাল পরিস্থিতি। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ইউনিট কমিটি গঠন করতে সক্ষম হলেও পিছিয়ে দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। ‘মাইম্যান’ কমিটিতে বসাতে ইউনিট সম্মেলন শেষ হচ্ছে না।

এ ছাড়াও দুই নেতার আলাদা আলাদা বলয় গড়ে ওঠায় দক্ষিণের রাজনীতিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ইউনিট কমিটি গঠনের নয়ছয়ের অভিযোগও জমা পড়েছে দলের হাইকমান্ডে।

আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বলছে, মহানগরের নেতৃত্ব ঢেলে সাজানো না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফসল ঘরে তোলা কষ্টকর হবে। বিএনপি-জামায়াত এখনই হুঙ্কার দেওয়া শুরু করেছে। তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের শোডাউন দিচ্ছে।

এর বিপরীতে কোনো ধরনের শক্তি দেখাতে পারছে না মহানগর আওয়ামী লীগ কিংবা সহযোগী সংগঠন। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করার তাগিদ দিলেও মহানগর নেতারা চেয়ার ছাড়তে রাজি নন। তাদের দাবি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে দেরি হওয়ায় তিন বছর সময় পায়নি। সে কারণে আরো কিছু দিন থাকছে চায় দায়িত্বে।

এ বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, গত চারটি সম্মেলনে আপনারা দেখেছেন নেত্রী (শেখ হাসিনা) তিন বছর পরপর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন করেছেন। 

সারাদেশের সব জেলা-থানায় সম্মেলন না হলেও জাতীয় সম্মেলনের ১৫-২০ দিন আগে কিন্তু ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন হয়ে যায়। সেই কারণে বলি, ঢাকা মহানগরের সম্মেলন কিন্তু আগামী নভেম্বর মাসেই হবে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ৪ মার্চ, যুব মহিলা লীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ১১ মার্চ, তাঁতীলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৯ মার্চ। তিন বছর মেয়াদি এসব কমিটির সময় শেষ হয়েছে অনেক আগেই।

এ ছাড়া আগামী ডিসেম্বরে কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং মহিলা শ্রমিক লীগের মেয়াদ শেষ হবে। অন্যদিকে ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আর ২০১৭ সালের ২১ মে ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’-এর আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র অনুসারে এসব সংগঠনের বর্তমান কমিটির মেয়াদও এরইমধ্যে শেষ হয়েছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ