বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ক্রীড়া সাংবাদিকতায় জালাল আহমেদ চৌধুরী ছিলেন একজন বটবৃক্ষ
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪১ দুপুর | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকতায় জালাল আহমেদ চৌধুরী ছিলেন একজন বটবৃক্ষ। বহু সাংবাদিকদের গুরু তিনি। প্রায় সব কটি জাতীয় দৈনিকে বিভিন্ন সময় তাঁর লেখা দেশের ক্রিকেট সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর ক্রিকেট বিশ্লেষণ, ভাষার অসাধারণ প্রয়োগ, অফুরন্ত শব্দভাণ্ডার ছিল অতুলনীয়। ক্রিকেট ছিল তাঁর কাছে শিল্প। আর সেই শিল্পের অন্যতম গুণী শিল্পি ছিলেন জালাল আহমেদ চৌধুরী। ছিলেন ক্রিকেটের চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া। এমন একজন মানুষের বিদায়ে দেশের ক্রীড়াসাংবাদিকরাও শোকাহত। খ্যাতিমান ক্রীড়া সাংবাদিক মোস্তফা মামুন সোশ্যাল সাইটে লিখেছেন, 'জালাল ভাই, আমরা দেখতাম ক্রিকেট, আপনি দেখতেন শিল্প প্রদর্শনী। আমাদের হাতে ছিল কলম আর শব্দ, আপনার ছিল তুলি আর ক্যনভাস। না, আপনার মত শুদ্ধ করে এই বাংলাদেশে ক্রিকেটকে কেউ ভালোবাসেনি। ব্যাট-বলের সংগে সুরুচি-সাহিত্য-শিল্পের যে এমন যোগ আপনার মত করে এই জাতিকে কেউ জানায়নি। 'এই শরৎ সকালে চারদিকে যেন বিষন্ন অন্ধকার আর অর্থহীনতা। আমাদের ক্রিকেট অভিভাকত্বের দেয়ালটা এভাবে ধসে গেল! এই ক্ষয়ে যাওয়া সময়ে যখন দরকার ছিল আরো বেশি। অনন্ত অভিবাদন শুদ্ধতার দ্রোনাচার্য। আপনার অনুপস্থিতির তীব্রতাই আপনাকে উপস্থিত রাখবে আমাদের যাবতীয় ক্রিকেট চিন্তায়।' আরেক খ্যাতিমান ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্র লিখেছেন, ' আগেও তো দেখা হওয়ায় দীর্ঘ বিরতি পড়ত মাঝে মধ্যেই। এবারও এমনই ধরে নিচ্ছি প্রিয় জালাল ভাই। সত্যিটা যে মানতেই চাইছে না মন। জালাল আহমেদ চৌধুরী। ক্রিকেটার, কোচ, সাংবাদিক, ক্রিকেট দার্শনিক। (১৯৪৭-অনন্তকাল)।' দীর্ঘ পোস্টে সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক আরিফুর রহমান বাবু শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, 'কবিয়ালের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করছে 'আমা বলতে কে আর আছে ? কার কাছে বা দাড়াইবো...'। সত্যি ক্রীড়া সাংবাদিকতা অঙ্গনে মাথার ওপরে যে বটবৃক্ষসম ব্যক্তিত্ব ছিলেন , তার দুজন শ্রদ্ধাষ্পদ রুমি ভাই ( মাসুদ আহমেদ রুমি ) আর রউফুল মামা ( রউফুল হাসান ) চলে গেছেন আগেই। তাদের অভাব , অনুপস্থিতি টের পাই বিএসজেএ গেলেই।' 'শেষ আশ্রয় ছিলেন জালাল ভাই, পরম স্মেহ - মায়ায় আগলে রাখতেন। অভিভাবক , পরামর্শক , বুদ্ধিদাতা , সুহ্রদ , শুভানুধ্যায়ী সবই ছিলেন। শুধু আমার কেন বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের বিশেষ করে ক্রিকেট লিখনীর ‘ বাতি’ ছিলেন জালাল ভাই। আজ সকালে ধানমন্ডি আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন আমার অতি প্রিয় ব্যক্তিত্ব জালাল ভাই।' 'আমাদের সকল ক্রীড়া সাংবাদিকই তার স্মেহ ধন্য। তবে বিএসজেএ‘র অগ্রজ সৈয়দ মামুন ভাইয়ের ভাষায় সাইদুর রহমান শামিম আর আরিফুর রহমান বাবু ছিল জালাল ভাইয়ের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা। আমাদের পিতৃসম অভিভাবকও ছিলেন তিনি। তার চলে যাওয়া , যে কত বড় আাঘাত , কি যে বিরাট  শুন্যতা...ওহ প্রভু প্রিয় দয়া করে জালাল ভাইয়ের আত্মার শান্তি দান করুন। তাকে স্বর্গবাসী করেন দয়াময়।' ক্রীড়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনি তার দীর্ঘ শোকবার্তায় লিখেছেন, 'জালাল ভাই সব্যসাচী। অনেক পরিচয়। আমার কাছে সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি ক্রিকেটপ্রেমী। তিনি শুদ্ধতার প্রতীক...। এই বাংলাদেশে এখন মোটামুটি ১৭ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। এই পরিচয় আর এমন কী..! তবু এখানেই তিনি অনন্য। অসাধারণ। ক্রিকেটকে তার মতো করে ভালোবাসতে, ধারণ করতে, চর্চা করতে ও ফুটিয়ে তুলতে আর কাউকে দেখিনি...।' 'স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বিসিএসে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় টিকেও তিনি যাননি ক্রিকেটের টানে। আমেরিকার গ্রীন কার্ডের মায়া ফেলে চলে এসেছিলেন দেশ ও দেশের ক্রিকেটের টানে...। তিনি বলতেন, ক্রিকেট তার জীবনের বড় শিক্ষক। আমরা জানি, ক্রিকেট আসলে ছিল তার জীবন...।' রাজনীতি/জেএস
« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ