উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে মনবতাবিরোধী অপরাধ করে থাকতে পারে চীনঃ জাতিসংঘ
নিউজ ডেস্ক:
|
চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলমানদের ‘স্বেচ্ছাচারী ও বৈষম্যমূলক আটক’ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হতে পারে। বুধবার জাতিসংঘের বিদায়ী মানবাধিকার প্রধান এক প্রতিবেদনে এমনটি বলেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারের হাইকমিশনার ও চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাচেলেট চীনের প্রতি খুব নরম হওয়ার জন্য কিছু কূটনীতিক এবং অধিকার গোষ্ঠীর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। গতকাল জাতিংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে তার চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে তিনি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। গত মে মাসে চীন সফর করেছিলেন ব্যাচেলেট। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় তার ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারের সন্ত্রাস দমন এবং ‘উগ্রবাদ দমন’ কৌশল প্রয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম প্রধান গোষ্ঠীর সদস্যদের নির্বিচারে ও বৈষম্যমূলক আটকের পরিমাণ... আন্তর্জাতিক অপরাধ, বিশেষ করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ গঠন করতে পারে।’ তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কারাগার বা আটক সকলকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চীনা সরকারকে সুপারিশ করেছিলেন। কার্যালয় আরও বলেছে, ২০১৭ সাল থেকে পরিবার পরিকল্পনা নীতির জোরপূর্বক প্রয়োগের মাধ্যমে প্রজনন অধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য ইঙ্গিত রয়েছে। সরকারী তথ্যের অভাব, এই নীতিগুলির বর্তমান প্রয়োগের সম্পূর্ণ মাত্রা এবং প্রজনন অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত লঙ্ঘনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন করে তোলে। পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে প্রধানত মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘু যার সংখ্যা প্রায় ১ কোটি, বন্দী শিবিরে জোরপূর্বক তাদের শ্রমের ব্যাপক ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে অধিকার গোষ্ঠীগুলো বেইজিংকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছে, এর মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জেনেভায় চীনের মিশন এই প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা তথ্য এবং অপরাধের অনুমানের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা দেশ এবং চীন বিরোধী শক্তি দ্বারা পরিকল্পিত একটি ‘প্রহসন’ বলে বর্ণনা করেছে। প্রতিবেদন প্রকাশের আগে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেছেন, বেইজিং বারবার এর বিরোধিতা করেছে। তিনি বলেন, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। ঝাং বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সবাই খুব ভালো করেই জানি যে তথাকথিত জিনজিয়াং ইস্যুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর উদ্দেশ্য অবশ্যই চীনের স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করা এবং চীনের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না এটি কারো জন্যই কোনো উপকার করবে, এটি কেবল জাতিসংঘ এবং একটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতাকে ক্ষুণ্ন করবে।’
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |