শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সুস্থ শিশু উন্নত আগামী
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২, ০৯:২৪ রাত | অনলাইন সংস্করণ

‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’-এ সত্য সমাজের বেশিরভাগ মানুষই উপলব্ধি করতে পারেন। 
নবজাতকের জন্য সর্বোত্তম খাবার হলো মায়ের দুধ। জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যেই শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়াতে হয়। শিশু জন্মের পর দুই থেকে তিন দিন মায়ের বুকে যে হলদেটে সোনালি, আঠালো দুধ নিঃসৃত হয়, তাকে শাল দুধ বা কলোস্ট্রাম বলে। পরিমাণে বেশি না হলেও এতে নবজাতকের জন্য থাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও পানি। 

বিশ্বে প্রায় ২৭ লাখ শিশুর মৃত্যু হয় অপুষ্টির কারণে, যা মোট শিশুমৃত্যুর ৪৫ শতাংশ। ইউনিসেফ এক প্রতিবেদনে জানায় বুকের দুধ খাওয়ালে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে অন্তত ৮ লাখ ২০ হাজার শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব। জন্মের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ালে এ শিশুমৃত্যুর হার প্রায় ৩১ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। এই শাল দুধকে শিশুর জীবনে প্রথম টিকা বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

অথচ অজ্ঞানতাবশত অনেকে এই দুধ ফেলে দেন। শিশুর জীবনে প্রথম ছয় মাস বুকের দুধই যথেষ্ট। এ থেকেই শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারে। লক্ষ্য রাখতে হবে- ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশু ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আটবার দুধ খাবে। এ সময়ে অন্তত ছয়বার তার প্রস্রাব হবে। তিন থেকে আটবার পায়খানা হবে। এর মাঝের পুরো সময়টুকু ঘুমিয়ে কাটাবে। শিশু সুষমভাবে বাড়তে থাকবে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের নির্দেশনা অনুযায়ী, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রথম ছয় মাসে শুধু বুকের দুধই খাওয়াতে হবে। এমনকি পানি, মধুও খাওয়ানো যাবে না। এ সময়ের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও পানি মায়ের দুধেই থাকে।' 
মুগদা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুল আহসান বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নির্দেশনা আছে- ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে। ছয় মাস বয়স থেকে পরিপূরক খাবার দিতে হবে। পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। শিশুদের চিপস, চিকেন ফ্রাই বা জাঙ্ক ফুড খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। এগুলো ডুবো তেলে ভাজা হয়। এ তেল যখন অনেকক্ষণ ধরে ভাজা হয়, তখন তা ট্রান্সফ্যাট তৈরি করে; যা হার্ট ব্লকের জন্য দায়ী। শিশুদের ক্ষেত্রে এগুলো আরও বেশি ভয়াবহ।' 

জন্মের পর মুহূর্ত থেকে শিশুর বেড়ে ওঠার প্রতিটি ক্ষণে তার প্রতি বিশেষ যত্ন ও মনোযোগ প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে শিশুর দৈহিক বিকাশের পাশাপাশি তার মানসিক বিকাশের দিকেও বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়ে থাকেন। সুস্থ শিশুর পূর্ণাঙ্গ বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সুস্থ পারিবারিক আবহেরও বিশেষ প্রয়োজন। শিশু-কিশোরের পর্যাপ্ত খেলাধুলার সুযোগের পাশাপাশি পড়াশোনার আনন্দময় পরিবেশ তাদের বাড়ন্ত বয়সের প্রকৃত বিকাশে বিশেষ অবদান রাখে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আবদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, 'একটি সমৃদ্ধ দেশের মূল শক্তি তার সুস্থ শিশু। সুস্থ শিশু বলতে একই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতার কথা বলা হয়। সুস্থ মা-ও এক্ষেত্রে অতি জরুরি একটি বিষয়। সুনির্দিষ্ট বয়সে শিশুর শারীরিক নির্দিষ্ট চাহিদা থাকে। সেদিকে খেয়াল রেখে শিশুর খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা মা-বাবার প্রাথমিক দায়িত্ব।'

নিউজ ডেস্ক| দৈনিক আজবাংলা

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ