সরকারি শিল্প কারখানা যেন উৎপাদনশীলতার মডেল হয়ঃ কৃষিমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:
|
দেশের সরকারি কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা খুব সীমিত বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। বলেন, ‘কারখানাগুলো বেশ পুরনো। কিন্তু এসব কারখানা এমন হওয়া দরকার যেন সেগুলো নিজ নিজ খাতে উৎপাদনশীলতার মডেল হয়ে ওঠে।’ রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কারখানাগুলো নিজ নিজ খাতে উৎপাদনশীলতার মডেল হওয়ার পরিবর্তে কম উৎপাদনশীলতার বা খারাপের মডেল হয়ে ওঠা খুব দুঃখজনক। সেজন্য সরকারি শিল্পকারখানাগুলোকে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে পরিচালনা করতে হবে।’ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে না পারলে শিল্পকারখানা লাভজনক হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি সমন্বিত স্টাডি করে দেখা দরকার সরকারি শিল্পকারখানার কোনটির উৎপাদনশীলতা ভালো আর কোনটির কম। জাতির সামনে সে স্টাডি তুলে ধরতে হবে। একইসঙ্গে বেসরকারি শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতেও জোর দিতে হবে।’ কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আগে উৎপাদনশীলতা অনেক কম ছিল। উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা এখন অনেক বেড়েছে। আগে এক বিঘা জমিতে ৪-৫ মণ ধান হতো, এখন সেটা ১৭-১৮ মণ হয়েছে। এই উৎপাদনশীলতা বাড়ার ফলে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাবার যোগান সম্ভব হচ্ছে।’ ‘তবে উৎপাদনশীলতা আরও বাড়ানো সম্ভব। আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন জাত যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২ উদ্ভাবন করেছে যার ফলন বিঘাতে ৩০ মণের বেশি। এগুলো সম্প্রসারণের চেষ্টা চলছে।’ কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গাভীগুলো আগে ৫ লিটার দুধ দিত। এখন উন্নত জাতের কারণে ২৮-৩০ লিটারও দুধ দিচ্ছে। কিন্তু ইউরোপে আরও ভালো জাত ও লালনপালনের প্রযুক্তি রয়েছে। সেখানে ৬০ লিটারও দুধ দেয়। সেগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।’ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি এসেছে। কিন্তু উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে আমরা সে সুবিধাগুলো কতোটা কাজে লাগাতে পারছি, সেটা মূল্যায়নের সময় এসেছে। এসডিজিতে আমাদের উৎপাদনশীলতার টার্গেট দ্বিগুণ করার কথা। সেটা একটি খুব বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা মাথায় নিয়ে কাজ করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে সেটা অর্জন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আবার প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। অনেক চাষী ধান উৎপাদনে সার, কীটনাশক ও সেচের প্রয়োজনীয়তা ঠিক রাখতে পারছেনা। কেউ বেশি দিচ্ছে, আবার কেউ কম।এতে একদিকে খরচও বাড়ছে, অন্যদিকে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হচ্ছে না। সেজন্য, এসব উপকরণের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাত্রা শিখতে হবে ও সর্বোচ্চ উৎপাদন করতে হবে।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সেরা অবস্থানে রয়েছে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে শিল্পের অবদান এখন ৩৭ শতাংশ। যা ক্রমবর্ধমান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সম্ভব হয়েছে।’ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন এনপিওর মহাপরিচালক মো. মেসবাহুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআইর হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |