বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত ট্রাফিক পুলিশ জরিপঃ আইবির
নিউজ ডেস্ক:
|
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ৯২ শতাংশ সেবা গ্রহণকারী ট্রাফিক পুলিশের দ্বারা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এর পরের অবস্থান হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের। আর সেবাগ্রহীতার মধ্যে সবচেয়ে কম ১৭.৩ শতাংশ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে। এমনকি ঘুষ গ্রহণের ক্ষেত্রেও ট্রাফিক পুলিশ এগিয়ে, সেখানে ঘুষের শিকার হয়েছে ৮৫.৬ শতাংশ সেবাগ্রহীতা। সবচেয়ে কম ৫৫.৭ শতাংশ ঘুষের শিকার হয়েছে থানা পুলিশ থেকে। যদিও ঘুষের পরিমাণ বিবেচনা করলে এগিয়ে আছে থানা পুলিশ। সেবা পেতে গড়ে ৮ হাজার ৭০৯ টাকা ঘুষ দিতে হয় থানায়। সেখানে ট্রাফিক পুলিশের অবস্থান তৃতীয়। বুধবার (৩১ আগস্ট) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সেবা খাত নিয়ে খানা জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গবেষক ফারহানা রহমান ও মোহাম্মদ নূরে আলম জরিপের তথ্য উপস্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটির মতে, ২০২১ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত তিনটি হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট ও বিআরটিএ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে- থানা পুলিশ, র্যাব, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সিআইডি, আনসার ইত্যাদি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে সেবাগ্রহীতাদের উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়ে থাকে যা এ জরিপে উঠে এসেছে। সেবা গ্রহণের হার অনিয়ম ও দুর্নীতি সেবা গ্রহণকারী খানার মধ্যে ৫৫.৭ শতাংশ ঘুষ দিয়েছে বা দিতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া সেবা গ্রহণকারী খানাগুলো অসদাচরণ ১১.৯ শতাংশ, থানা হাজতে/প্রিজন ভ্যানে স্বাস্থ্যবিধি না মানার শিকার ১০ শতাংশ, ভয়-ভীতির শিকার ৮ শতাংশ, মিথ্যা মামলায় জড়ানো ৫ শতাংশ ও সাধারণ ডায়েরি বা এজাহার গ্রহণে অবহেলা বা সময়ক্ষেপণ ৪.১ শতাংশ, অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নেওয়া ৩.৬ শতাংশ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে সেবা নিতে গিয়ে যেসব খানা ঘুষ দিয়েছে বা দিতে বাধ্য হয়েছে তাদের গড়ে ৬ হাজার ৬৯৮ টাকা দিতে হয়েছে।
সংস্থা ভেদে অনিয়ম ও দুর্নীতি অন্যদিকে হাইওয়ে পুলিশ থেকে সেবা নিতে গিয়ে ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এছাড়া থানা পুলিশ হতে সেবা নিতে গিয়ে ৬৭ দশমিক ৪ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। ঘুষের হার যদিও সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ঘুষ দিতে হয়েছে থানা পুলিশকে। গড়ে ৮ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সবচেয়ে কম ঘুষ দিতে হয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চকে গড়ে ১ হাজার ৫৩১ টাকা। ঘুষ দেওয়ার পরিমাণের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ, যার পরিমাণ গড়ে ৬ হাজার ৬৩৩ টাকা। আর ট্রাফিক পুলিশের গড় ঘুষের পরিমাণ ৫ হাজার ১৮ টাকা। যে সব কাজে ঘুষ লেনদেন ও পরিমাণ এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা। এ লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিধান করে থাকে, সমাজের বিভিন্ন অংশীজনকে নিরাপত্তা সেবা দিয়ে থাকে। অপরাধ ও অপরাধী চিহ্নিত করে এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। এছাড়াও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও এ সংক্রান্ত আইন-কানুন বাস্তবায়ন করে থাকে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে সেবগ্রহীতাদের উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়ে থাকে জরিপে উঠে এসেছে।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |