প্যাকেটজাত খাবারে মাত্রাতিরিক্ত লবণ, চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃ গবেষণা
নিউজ ডেস্ক:
|
বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে, যা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। আজ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। এতে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন হার্ট ফাউন্ডেশনের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা সমন্বয়ক ডা. আহমেদ খাইরুল আবরার। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারে সর্বোচ্চ ৭৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণকে নিরাপদ মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে দেখা গেছে, বাজারে বহুল প্রচলিত ৬১ শতাংশ বিস্কুট, চিপস, চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, ঝালমুড়ি, আচার, চাটনি ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে। আর ৩৪ শতাংশ খাবারে নিরাপদ মাত্রার দ্বিগুণ অর্থাৎ ১ দশমিক ৫ গ্রামের বেশি লবণ পাওয়া গেছে। ডা. আহমেদ খাইরুল বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বহুল প্রচলিত চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ ও ঝালমুড়ির কোনোটিতেই নির্ধারিত মাত্রার লবণ পাওয়া যায়নি, বরং এগুলোতে দ্বিগুণের বেশি লবণ রয়েছে। একইভাবে আচার ও চাটনির ৮৩ শতাংশ, চিপসের ৬৩ শতাংশ এবং ডাল বুট ভাজার ৬০ শতাংশে দ্বিগুণ লবণ। তবে চিপস, ডাল-বুটের একটিতেও নির্ধারিত মাত্রার লবণ নেই। তিনি বলেন, মূলত বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের সর্বোচ্চ কোনো সীমা নির্ধারণ করা নেই। ফলে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যে ইচ্ছেমতো লবণ দেয়। যদিও প্যাকেটজাত খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা-২০১৭ অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিদ্যমান লবণের পরিমাণ প্যাকেটে উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু গবেষণায় প্রায় অর্ধেক (৪৪%) খাবারের প্যাকেটে লেখা পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে। গবেষণায় বলা হয়, উন্নত বিশ্বের মতো দেশেও খাবারের মোড়কের সম্মুখভাগে লেবেলিং (ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেলিং) প্রচলন করা হলে, ভোক্তারা সহজে খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে তা কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এর ফলে মোড়কে থাকা স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য আকারের লেখা এবং চিহ্ন দেখে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারবেন খাবারটি স্বাস্থ্যসম্মত হবে কিনা। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে , দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষই এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। অতি মাত্রায় লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আর এসব রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে লবণের পরিমাণ নির্ধারণ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের প্যাকেটে পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আলিম, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিড মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সাইন্সের অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর মো. একরামুল্লাহসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |