বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ডিজিটাল অপরাধ ঠেকাতে আমাদের প্রযুক্তিগত অক্ষমতা আছেঃ মোস্তাফা জব্বার
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২, ০১:১৯ রাত | অনলাইন সংস্করণ
ডিজিটাল অপরাধ ঠেকাতে আমাদের প্রযুক্তিগত অক্ষমতা আছেঃ  মোস্তাফা জব্বার

ছবি । সংগৃহীত

ডিজিটাল অপরাধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, অপরাধ ঠেকাতে আমাদের প্রযুক্তিগত অক্ষমতা আছে। এখন ডিজিটাল অস্ত্রের মাধ্যমে দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধ। আমরা উন্নত প্রযুক্তি খুঁজতে হাতড়িয়ে বেড়াচ্ছি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্মেলন কেন্দ্রে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন ও বিটিআরসি’র যৌথ আয়োজনে ‘সাইবার সুরক্ষা কী, কেন, কীভাবে’ বিষয়ক দিনব্যাপী যুব কর্মশালা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল অপরাধ ঠেকাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি দরকার। মাথা ব্যথা হলেই মাথা কেটে ফেলব না। ওষুধ খেতে হবে। সেক্ষেত্রে সচেতনতা প্রধান হাতিয়ার। প্রায় ২৬ হাজার পর্নসাইট বন্ধ করা হয়েছে। ৬ হাজারের মতো জুয়াড়ি সাইট বন্ধ করা হয়েছে। আগে পর্নসাইট দেখায় দেশ ১০ নম্বরে ছিল। এখন ১০০ এর তালিকাতেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ‘সাইবার নিরাপত্তা’ পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্কুল, কলেজের পাঠ্য বইয়ে সাইবার অপরাধের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আজকের শিক্ষার্থীরা সবাই অপরকে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে জানাবে। আমরা পাইরেটেড সফটওয়্যার যেন ব্যবহার না করি। এর সাথে ডিজিটাল অপরাধ যুক্ত। আগামীতে মাসজুড়ে ডিজিটাল অপরাধ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলেন মন্ত্রী।

ডিজিটাল অপরাধের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অপরাধের চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক থানায় একটি সাইবার বা ডিজিটাল ক্রাইম ইউনিট করা দরকার। সেখানে কর্মরতদের ব্যাপকভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেপিআই’ এর মতো ‘সিআইএ’ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ডিজিটাল রূপান্তরে সমস্যার চেয়ে সুবিধাই বেশি এমন ইঙ্গিত করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ ই-নথি’ আমাদের দেশে বিপ্লব ঘটিয়েছে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসি’র সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ।

এসময় আলোচনায় অংশ নেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তৌহিদ ভূঁইয়া, সাইবার সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (ডিএসএ) পরিচালক তারেক বরকতুল্লাহ,পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।

সাইবার অপরাধের পরিধি পুলিশি চোখে দেখা ‘ইলেক্ট্রিক ক্রাইম’ নিয়ে আলোচনা করেন পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম। ‘মোবাইল নম্বর স্পুফ’ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে জালিয়াতি এবং ডিএনএস পয়জনিং বিষয়ে নিজের তদন্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।

এ নিয়ে ব্যবহারকারীদের সচেতন হয়ে কোনো ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, আত্মসুরক্ষায় নিজেদের সম্পদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। এজন্য অনলাইনে ‘ডোন্ট সেভ’ মেনে চলুন। অভিভাবকরা প্যারেন্টাল কন্ট্রোল মেনে চলুন।

সাইবার অপরাধ তদন্ত ও অপরাধীদের ধরতে বহুমুখী চুক্তি ‘এমল্যাট (MLAT) দরকার’ বলেও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

কপি অ্যাপলিকেশন বা সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে ‘সাইবার’ ঝুঁকি বাড়ে বলে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান সাবাইর সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (ডিএসএ) পরিচালক তারেক বরকতুল্লাহ।

তিনি বলেন, বড় বড় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার সুরক্ষার বিষয়ে কৃচ্ছ্রসাধন করেন। তারা পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে। তাই আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের প্রয়োজনের বাইরের কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করা বন্ধ রাখতে হবে। আক্রান্তদের ৯৯৯-৮ নম্বরে ফোন করলো সরাসরি পুলিশে অভিযোগ করতে পারবেন।

এর আগে দুই ঘণ্টাব্যাপী কর্মশালায় সারাদেশ থেকে আসা শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় তরুণকে সাইবার সুরক্ষা ‘কী, কেন, কীভাবে’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন সাইবার অপরাধ ও সাইবার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী হাসান।

অনুষ্ঠান শেষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সাইবার অ্যাওয়ারনেস প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ