আরেক ধরনের রোগী আছেন, শুরুতেই যাঁদের রক্তে শর্করা খালি পেটে ১৬ মিলি মোলের ওপর এবং গড় শর্করা এইচবিএওয়ানসি ১০ শতাংশের ওপর। এসব ক্ষেত্রে ওষুধ না দিয়ে ইনসুলিন দিয়ে চিকিৎসা করে প্রথমে শর্করা কমিয়ে আনতে হবে। কারও যদি তিন বা ততোধিক ধরনের মুখে খাবার ওষুধ উচ্চমাত্রায় সেবন করার পরও রক্তে শর্করা অনিয়ন্ত্রিত থাকে, তবে তাঁকেও ইনসুলিন নিতে হবে।
ইনসুলিন সবচেয়ে নিরাপদ
ডায়াবেটিসের সব ধরনের চিকিৎসার মধ্যে ইনসুলিন সবচেয়ে নিরাপদ। কারণ, এর তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিডনি বা যকৃৎ অকৃতকার্যতার রোগী, হৃদ্যন্ত্র অকৃতকার্যতা বা হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগীর জন্যও ইনসুলিনই নিরাপদ ভরসা। ডায়াবেটিস চিকিৎসায় ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে তাই ইনসুলিনের বিকল্প নেই।
ইনসুলিনের প্রধানতম দুটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো—ওজন বৃদ্ধি ও হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা হঠাৎ শর্করা কমে যাওয়া। নতুন ধরনের স্মার্ট ইনসুলিনে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক কম। হাইপোগ্লাইসেমিয়া মুখে খাওয়ার কিছু ওষুধেও হয়ে থাকে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হলো সঠিক সময়ে খাওয়া ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করা। ইনসুলিন গ্রহণকারী রোগীরা অন্যদের তুলনায় বেশি সুশৃঙ্খল ও সচেতন হয়ে থাকেন।
ইনসুলিন নেওয়ার আগে
আধুনিক ইনসুলিন ডিভাইস প্রায় ব্যথামুক্তও বটে। হালের ইনুসলিনে ইনজেকশন দেওয়ার পর আধঘণ্টা অপেক্ষা করারও প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি ভুলে গেলে খাবার পরও দেওয়া যায়।
শেষ কথা
কখনো স্থায়ীভাবে, কখনো সাময়িক—আপনার চিকিৎসক আপনার ভালোর জন্যই ইনসুলিন ব্যবস্থাপত্রে দিতে পারেন। এর মানে এই নয় যে আপনার জীবনের সব আশা–ভরসা শেষ। কোনো বিশেষ কারণে ইনসুলিন নিতে হলে সারা জীবন নিতে হবে, এমনটাও সব সময় সত্যি নয়। আবার যদি সারা জীবন নিতেও হয় সেটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা। বরং রক্তে শর্করা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, কিডনি অকার্যকর, দৃষ্টিহীনতাসহ নানা জটিলতা দেখা দেবে। তাই রোগকে ভয় পাবেন, চিকিৎসাকে নয়।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা