বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘বাংলা কর্নার’ উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩৪ বিকাল | অনলাইন সংস্করণ

‘মুজিববর্ষ’ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে নিউইয়র্কের কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘বাংলা কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়কের্র উদ্যোগে এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির সহযোগিতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সেখানকার সময় অনুযায়ী গতকাল এ কর্নার উদ্বোধন করেন। তিনি এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।

 

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু, কুইন্স বোরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরীর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস এম. ওয়ালকট। এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির সদস্য এবং সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্ববৃহৎ আবাসস্থল নিউইয়র্কের কুইন্স বোরো যেখানে ইংরেজি, স্প্যানিশ ও চাইনিজ ভাষার পরই বাংলা চতুর্থ বৃহৎ ভাষা হিসেবে ব্যবহ্নত হয়। সে কারণে ওই বোরোতে অবস্থিত কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘বাংলা কর্নার’ উদ্বোধন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। ‘বাংলা কর্নার’টিতে সর্বমোট ৩০৯টি বই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছে। বইগুলো বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথিতযশা লেখক ও সাহিত্যিকদের লেখা। এ ছাড়া বাংলাদেশের উপন্যাস, গল্পসমগ্রসহ শিশু-কিশোর উপজীব্য বইগুলো এ কর্নারে স্থান পেয়েছে।

 

২০১৯ হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত পর পর তিন বছর কুইন্সের মূলধারাকে সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কুইন্সে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেীি-আমেরিকানদের জন্য কনস্যুলেট যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ’বাংলা কর্নার’ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালে এই ‘বাংলা কর্নার’ বিপুল পরিসরে উদ্বোধনের কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময় এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন সীমিত পরিসরে কভিড সংক্রান্ত নিয়মাবলি অনুসরণ করে ‘বাংলা কর্নার’টির উদ্বোধন করা হয়। 

 

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ২০২১ সাল বিভিন্ন দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ বছর আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন।

 

তিনি বলেন, এ ছাড়া এ বছর বাংলাদেশের আরেকটি উল্লেখযোগ্যপ্রাপ্তি হলো বাংলাদেশ এ বছরই স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সব সূচকে সফলভাবে উর্ত্তীর্ণ হয়েছে। 

 

তিনি বলেন, সে কারণে এ বছরের এ দিনে ‘বাংলা কর্নার’-এর শুভ উদ্বোধন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তিনি এ সময় কুইন্স লাইব্রেরিকে ঘিরে তার অতীত স্মৃতিচারণ করেন।

 

তিনি আরও বলেন, আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি। তিনি আশা প্রকাশ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের নিয়ে এই ‘বাংলা কর্নার’-এ আসবেন এবং বই পড়বেন। তিনি এই বিশেষ দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ৩২টি ভাষণের সংকলন ও বিশ্লেষণ এবং প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ৭৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির লেখনিসংবলিত বিশেষ সংকলন কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিকে উপহার দেন।

 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে বলেন, মুজিববর্ষে স্থাপিত এই ‘বাংলা কর্নার’টি আমাদের বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। 

 

তিনি আশা প্রকাশ করেন কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরীসহ অন্যান্য মূলধারার প্রতিষ্ঠানের সাথে কনস্যুলেটের যোগাযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

 

নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ও ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস এম. ওয়ালকট অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। 
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন সি. ল্যু, এবং কুইন্স বোরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস এবং সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস। প্রত্যেকেই বাংলা ভাষাকে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশী-আমেরিকানদের কাছে তুলে ধরার এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষি সকলের বিশেষ করে শিশু কিশোরদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা তৈরি হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

 

বক্তব্য শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিজের লেখা বেশ কয়েকটি বই কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ডেনিস ওয়ালকটের হাতে তুলে দেন। কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেনিস এম. ওয়ালকট কমিউনিটিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে একটি সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।

 

এই বইগুলো কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরীর প্রধান শাখায় ৬ মাস প্রদর্শিত হবে এবং পরবর্তী সময় উক্ত লাইব্রেরির বিভিন্ন শাখায় এই বইগুলো সংগৃহীত থাকবে।
খবর বাসস

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ