ইসলামের নামে ফেৎনা-বিভেদ সৃষ্টিকারীদের রুখে দাঁড়ান: তথ্যমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:
|
ইসলামের নামে ফেৎনা-বিভেদ সৃষ্টিকারীদের রুখে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে এদিন বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবে যোগ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীতে শান্তি মহাসমাবেশে ড. হাছান দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে স্মরণ করিয়ে দেন, এই জনপদে, এই উপমহাদেশে কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে ইসলাম বিস্তার লাভ করেনি। ওলী-আম্বিয়ারা মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে, বুঝিয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে এনেছেন। তাই যারা ইসলামের কথা বলে ওলী-আম্বিয়াদের বিরোধিতা করে, হানাহানিতে লিপ্ত হয়, অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর আক্রমণ করে, তারা ফেৎনা বা বিভেদ সৃষ্টিকারী। এদের রুখে দাঁড়াতে হবে। বুধবার (২০ অক্টোবর) হিজরি ১৪৪৩ সনের ১২ রবিউল আউয়াল মহানবী (সা:) এর জন্ম ও ওফাত দিবস পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত জশনে জুলুস ও শান্তি মহাসমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। আয়োজক সংগঠন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়া ও আন্তর্জাতিক সূফি ঐক্য সংহতির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান অনলাইনে এবং শাহসূফি সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে হানাহানি, দলাদলি বন্ধ করে মানুষকে সুপথে এনে শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন মহানবী (সা:)। ইসলামের মূল মর্মবাণী মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি স্থাপন করা। যারা এই মর্মবাণী ধারণ করে, তারা কখনো জঙ্গি হয় না, হানাহানিতে লিপ্ত হয় না, ইসলামের নামে কারো ওপর আক্রমণ করে না, কারণ রাসুল (সা:) কখনো ধর্মের নামে কারো ওপর আক্রমণের শিক্ষা দেননি, ইসলাম কখনো সে শিক্ষা দেয় না।’ কিন্তু আজকে ইসলামের এই মূল মর্মবাণী থেকে সরে গিয়ে অনেকে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ওলী-আম্বিয়াদের বিরুদ্ধে কথা বলে, তরুণদের বিপথগামী করে, বলেন তিনি। ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ এবং বঙ্গবন্ধুর পূর্বপুরুষেরা ইরাকের বাগদাদ থেকে ধর্মপ্রচারের জন্য এদেশে আসেন’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এদেশ যেমন মুসলিমদের, তেমনই হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের, আমাদের সবার। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এখানে শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য বজায় রাখতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো।’ এসময় ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর অত্যাচার বন্ধে ও মায়ানমার থেকে উদ্বাস্তু হয়ে এদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপদে মায়ানমারে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. হাছান মাহমুদ। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের এই দেশে ঠাঁই হবে না। সরকার এদের কঠোর হস্তে দমন করবে। পীরগঞ্জ সফররত ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই সমাবেশের মাধ্যমে দেশে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেন। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মাইভান্ডার শরীফের শীর্ষনেতা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ শান্তি মহাসমাবেশ সফল করার জন্য সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ জানান। এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়: প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবে তথ্যমন্ত্রী এদিন বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবে যোগ দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় তিথিতে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও জনহিতের বাণী আমাদের শান্তি ও সম্প্রীতির দিশারী। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, এদেশ আমাদের সবার। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হিসেবে অম্লান রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথেরোর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফজালুর রহমান বাবু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়। সভাশেষে অতিথিবৃন্দ প্রবারণার ফানুস ওড়ানোতে অংশ নেন। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |