শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আমি এই ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট দিচ্ছিঃ তসলিমা নাসরিনের
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৪২ দুপুর | অনলাইন সংস্করণ
আমি এই ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট দিচ্ছিঃ তসলিমা নাসরিনের

ছবি । সংগৃহীত

নরসিংদীর রেলস্টেশনে এক তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার নারীর জামিন শুনানিতে পোশাক নিয়ে হাইকোর্টের একটি মন্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন মতামত আসছে। 

এরই প্রেক্ষিতে গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘যেমন খুশি তেমন পর’ নামে একটি অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে পোশাকে বৈচিত্র্যতাকে স্বাগত জানানো হয়। এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এক তরুণীর ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি সংক্রান্ত একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কেউ কেউ তার পক্ষ নিলেও, বেশ কিছু পোস্টে তার বিরোধিতা করা হচ্ছে। তাকে ট্রল করে বানানো হয়েছে প্রচুর ভিডিও।  

এবার ওই তরুণীর পক্ষ নিয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরীন। তসলিমা ফেসবুকে লিখেছেন- আমি এই ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট দিচ্ছি।  

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেওয়া তার স্ট্যাটাসটি- 
মেয়েরা যেন ছোট পোশাক না পরে, এই উপদেশ দিতে কিছু অশিক্ষিত অসভ্য লোক তাদের  অশ্লীল ব্যানার নিয়ে ঢাকার পথে নেমেছিল। তার প্রতিবাদে একটি মেয়ে ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পরে প্রতিবাদ করেছে, বলেছে তার নানি দাদিকে সে ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পরতে দেখেছে, কেউ কেউ মেয়েটির পক্ষ নিয়ে  বাংলাদেশের এক টাকার নোট  দেখিয়েছে, যে নোটে  ব্লাউজবিহীন একটি গ্রামের মেয়ের ছবি ছাপানো। অথচ শহরের একটি  মেয়েকে ব্লাউজ ছাড়া হাঁটতে দেখে অভুক্ত পুরুষের চোখ দিয়ে লালা ঝরেছে, অভুক্ত মেয়েদের  চোখ দিয়ে হিংসে ঝরেছে।

আমি এই ব্লাউজবিহীন শাড়ি পরা সাহসী মেয়েটিকে স্যালুট দিচ্ছি। নষ্ট সমাজকে  বদলানোর জন্য সাহসী মানুষের প্রয়োজন। অশিক্ষিত অসভ্য লোকদের চোখে জ্বালা ধরানোর জন্য, কানে তালা লাগানোর জন্য, নাকে  ঝাঁঝালো গন্ধ দেওয়ার জন্য,  মুখের রা বন্ধ করার জন্য, উত্থানরহিত করার জন্য কিছু করা  দরকার সব সময়। নাহলে ওদের নিঃশ্বাসে কলুষিত হবে আকাশ বাতাস। সমাজ পচে যাবে, মানুষের মৃত্যু হবে। 

বাঙালির পোশাক আদিকাল থেকেই স্বল্প। ব্লাউজ জিনিসটা একেবারেই নতুন,  ব্রিটিশের নিয়ে আসা।  যত কম পোশাক পরবে নারী-পুরুষ, ততই   বাঙালিত্ব  বাঁচবে। যখন নোংরা ধর্মযুদ্ধ চলছে, ধনীরা ঠকাচ্ছে গরিবদের, যখন লোভ লালসা হিংসে দ্বেষে অন্যায় অবিচারে  পৃথিবী দুর্গন্ধময় হয়ে উঠছে, ক্রমশ মেকি হয়ে  পড়ছে, তখন কিছু অশিক্ষিত   লোক মেতে আছে মেয়েদের কাপড় চোপড় নিয়ে, মূলত মরিয়া হয়ে উঠছে মেয়েদের বোরখা পরিয়ে নিজেদের ধর্মীয় রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধার করতে। এদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস আজ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। এই অসভ্যদের নিশ্চিহ্ন করতে হলে ওই মেয়েটির মতো লক্ষ কোটি সাহসী মেয়ে দরকার, লক্ষ কোটি শিক্ষিত সভ্য ছেলে দরকার।  

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ