আমরা বিভিন্ন সময় নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করিঃ মাহমুদ স্বপন
নিউজ ডেস্ক:
|
শুকুরের মাংস যেমন হারাম, ঘুষের টাকাও তেমন হারাম। আর হারাম সবসময় হারামই হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জয়পুরহাট জেলা শহরের কালেক্টরেট মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সামাজিক-সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন। হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ বলেন, কোরআনের বা হাদিসের বিভিন্ন অংশের খণ্ডিত অংশ ব্যবহার করে এমনভাবে অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়। যেন মানুষের মধ্যে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়, এক ধরনের পাগলামির সৃষ্টি হয় এবং এটাকে পুঁজি করে স্বার্থবাদী গোষ্ঠী তাদের কর্মকাণ্ড হাসিল করে। পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল ইসলামের ভিত্তিতে, তারা শাসক ছিলেন, আর তারা কেউই সহি মুসলমান ছিলেন না। তারা কেউই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন না। তারা শক্ত এবং তরল খাবার গ্রহণ করতেন। শুধুমাত্র শুকুর গ্রহণ করতেন না। আমরা প্রায়ই বলি শুকুরের মাংস হারাম। মুসলমানরা শুকুরের দিকে তাকায় না। কিন্তু ঘুষের টাকা আমাদের হারাম মনে হয় না। শুকুরের মাংস যেমন হারাম, ঘুষের টাকাও তেমন হারাম। তাই হারাম সবসময় হারাম। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করি। ভোট লাগবে এজন্য ইসলাম রক্ষার জন্য ভোট দেন উমুক মার্কায়, ভোট লাগবে এজন্য বেহেস্তের টিকিট নেওয়ার জন্য ভোট দেন উমুক মার্কায়। এ ধরনের ফতুয়া নানা সময় বাংলাদেশের মাটিতে হাজির করা হয়েছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ শুধু সামাজিক-সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য দায়ী নয়, এর জন্য দায়ী কিছু কতিপয় অমানুষ। তারা সমাজে বসবাস করে ব্যক্তি, পারিবারিক অথবা গোষ্ঠী স্বার্থে। যখন যে উপাদানকে ব্যবহার করতে হয়, ওই উপাদানকে ব্যবহার করে তারা সামাজিক-সম্প্রীতি নষ্ট করে। সমাজে সন্ত্রাস, সহিংসতা, উগ্রবাদের জন্ম দেয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই শান্তির ধর্মে কখনও এসবের কোনো জায়গা নেই। ধর্ম এমন একটা বিষয়, এটি মানুষের সবচেয়ে ভালোবাসা, কোমল অনুভূতি, আবেগ, নমনিয়তা। প্রত্যেকটি নাগরিক যারা সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করেন, তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভীতু, শ্রদ্ধাশীল, সৃষ্টিকর্তার প্রতি সকলের ভালোবাসা অপরিসীম। এমন আনুগত্যের কারণে মানুষ ধর্মকে ধারণ করে হৃদয়ের প্রচণ্ড আবেগ দিয়ে। এই যে মানুষের আবেগ, মানুষের অনুভূতি কিছু কিছু মানুষ কখনও কখনও এটিকে ভিন্ন ব্যাখ্যা করে, মানুষকে জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত করবার চেষ্টা করেন। কোথাও কোনো ধর্মে উগ্রতা, জঙ্গিবাদের স্থান নেই, যোগ করেন হুইপ স্বপন। সামাজিক-সম্প্রীতি’র এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আ.লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম সোলায়মান আলী, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোমিন আহমেদ চৌধুরী জিপি, নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপিসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |