অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত চিকিৎসক কাজ করলে ব্যবস্থাঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
নিউজ ডেস্ক:
|
অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে নিবন্ধিত চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর। আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) মেডিভয়েসকে এ তথ্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর। এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে তিনি মেডিভয়েসকে বলেন, অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত চিকিৎসক কাজ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের আগে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসককে ওই প্রতিষ্ঠানের বৈধতার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘যে সমস্ত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান অনিবন্ধিত বা যারা কোনো নিয়ম না মেনেই হাসপাতাল পরিচালনা করছে। ওখানে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক কাজ করতে গেলে, তাঁর পেশাগত ঝুঁকি আছে। অর্থাৎ ওই পরিবেশে কাজ করার কারণে চূড়ান্তভাবে আইনগত জটিলতায় পড়বেন তিনি। হয় তো বুঝতে পারছেন না, কত বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছেন তিনি। সুতরাং এই জটিলতা থেকে তাঁর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’ ‘এ লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) অনুরোধ করবো, যাঁরা অনিবন্ধিত-অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাবেন, তাদের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার। কারণ তাঁরা সমস্যায় নিপতিত হবেন, যা তাঁরা বুঝতে পারছেন না’, যোগ করেন তিনি। বিষয়টির অধিকতর ব্যাখ্যা দিয়ে এই স্বাস্থ্য প্রশাসক বলেন, ‘ধরেন, আপনি একটি অনিবন্ধিত ক্লিনিকেট গেলেন, আপনি যত ভালো অ্যানেসথেশিওলজিস্ট হোন না কেন, সেখানে গিয়ে দেখবেন, ওয়ার্ডবয় অপারেশন করছে। বিষয়টি জানার পরও আপনি সেখানে অ্যানেসথেশিয়া দিলেন, আর রোগী মারা গেলো। আপনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবেন? আর এ কারণেই এসব জায়গায় যাওয়া থেকে চিকিৎসকদের বিরত থাকা উচিত।’ হাসপাতালের সাইনবোর্ডে থাকবে নিবন্ধন নম্বর তাহলে একজন চিকিৎসক নিবন্ধিত বা বৈধ ক্লিনিক কিভাবে চিহ্নিত করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে, নিবন্ধিত ক্লিনিকগুলোর লাইসেন্স নম্বর একেবারে সামনে টানিয়ে রাখতে হবে, যাতে চিকিৎসকগণ বুঝতে পারেন কোনটা নিবন্ধিত, আরও কোনটা নিবন্ধিত না। এ রকম ঘোষণা আগেও ছিল। বিষয়টি আরও পরিষ্কার করতে এখন এটা জোরদার করা হচ্ছে।’ প্রকাশ করা হবে অবৈধ ক্লিনিকের তালিকা অধ্যাপক আহমেদুল কবীর বলেন, অবৈধ হাসপাতালের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে, এই ক্লিনিক অনিবন্ধিত। তালিকা দিয়ে দিলে মানুষ সতর্ক হবে। এতে আস্তে আস্তে এই অনিয়মগুলো দূর হবে। শুধু তালিকা না, বরং হাসপাতালের সাইনবোর্ডে নিবন্ধন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। এতে এসব হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগীরা সতর্ক ও সাবধানতা অবলম্বন করতে পারবেন। চিকিৎসার মান তদারকিতেও শিগগিরই অভিযান তিনি আরও বলেন, এ কাজ সম্পন্ন হলে নিবন্ধিত হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার মান তদারকিতে অভিযান শুরু হবে। ওই অভিযানে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। তাও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে, যাতে মানুষ জানতে পারে কোন হাসপাতালের মান কেমন। অভিযানে এ পর্যন্ত কত সংখ্যক হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার (২৯ আগস্ট) অভিযান শুরু হয়েছে, চলবে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। চার দিন পর সর্বমোট সংখ্যা জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রথম দিন সারাদেশে একশ’র কাছাকাছি হাসপাতাল বন্ধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অনিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে গত ২৬ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারাদেশে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে প্রায় এক হাজার ৬৪১টি অনিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে। অভিযানে রাজস্ব আদায় হয় ২৫ কোটি ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৭ টাকা।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |