বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ইবি শিক্ষকদের মধ্যে মারামারি
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শনিবার, ২৬ মার্চ ২০২২, ০৫:৪৬ বিকাল | অনলাইন সংস্করণ

স্বাধীনতা দিবসের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গেলে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় গ্রুপের প্রায় ৩০ জন শিক্ষক এ মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রকে বিভিন্ন সমিতি, পরিষদ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র ঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর জিয়া পরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়।

এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট বেদির নিচে অবস্থান করছিল। তাদের নাম ঘোষণা না করে অন্য পরিষদগুলোর নাম ঘোষণা করলে তারা বেদিতে ওঠার চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে শিক্ষক ইউনিট গ্রুপের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলামের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

পরে শিক্ষক ইউনিট ধাক্কাধাক্কি করে বেদিতে উঠে যায়। এ সময় সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর ড. কাজী আকতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার, সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান, প্রফেসর ড. আহসান-উল-আম্বিয়া, প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন, সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, এএইচএম নাহিদ, হাফিজুল ইসলামসহ প্রায় ৩০ জন শিক্ষক বেদিতে ওঠেন।

তারা বেদিতে উঠে গেলে কেন্দ্রীয় ঘোষিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের ড. মামুনুর রহমান ফুল কেড়ে নেন। এ সময় কেন্দ্রীয় ঘোষিত পরিষদের প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরেফিন, প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা, প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান, প্রফেসর মামুনুর রহমান, প্রফেসর ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল, প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষক তাদের উপরে চড়াও হন।

এ সময় টানা-হেচড়া করতে গেলে ফুলের ডালা ভেঙে বেদিতে পড়ে যায়। পরে উভয়পক্ষের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারের সামনেই দফায় দফায় মারামাড়িতে জড়িয়ে পড়েন। শিক্ষক ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাদের বাধা দেয়। পরে তাদের সামনে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকদের বেদি থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদি থেকে নেমে যান। এরপর ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে মানববন্ধন করেন। তারা এ ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করেন। একইসাথে ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করা সকলের অধিকার। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে না দিয়ে বিএনপির লোকদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন বলেন, সকলের সুশৃঙ্খলভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় নাম ঘোষণা না করা সত্ত্বেও শিক্ষক ইউনিট জোর করে বেদিতে উঠে পড়ে। এ সময় সহকারী প্রক্টর তাদেরকে নাম ঘোষণার পর ফুল দিতে বললে প্রক্টরের সাথে তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ শুরু করে। পরিস্থিতি শান্ত করতে আমরা সেখানে গেলে তাদের সাথে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এটি তাদের পূর্বপরিকল্পিত। আমরা কেন্দ্রকে বিষয়টি জানিয়েছি।

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ