বস্ত্রখাতের ৪৩ পণ্য রপ্তানিতে মিলবে নগদ সহায়তাঃ বাংলাদেশ ব্যাংক
নিউজ ডেস্ক:
|
বস্ত্রখাতের পাঁচটি উপখাতসহ ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেবে সরকার। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছর থেকেই রপ্তানিতে এ সহায়তা পাবে পণ্যগুলো। তবে বস্ত্রখাতে নতুন বাজার সম্প্রসারণে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বাড়তি নগদ সহায়তা দেওয়া হবে না। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বের হয়ে যাওয়ায় সেখানে রপ্তানিতে নতুন বাজার সম্প্রসারণের আওতায় বাড়তি নগদ সহায়তা মিলবে না। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। এবার নগদ সহায়তা পাবে এমন তালিকায় মাংস থেকে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত পণ্য যুক্ত করা হয়েছে। এতদিনে যা ছিল শুধু হালাল মাংস রপ্তানিতে। এখন মাংসজাতীয় পণ্য রপ্তানির বিপরীতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাবেন উদ্যোক্তারা। ২০২১-২২ অর্থবছরের আগ পর্যন্ত কোনো বিদেশি কোম্পানি রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাইনি। তবে এবারও গত অর্থবছরের মতোই বিশেষায়িত অঞ্চল তথা বেজা, বেপজা ও হাই-টেক পার্কে অবস্থিত সব ধরনের প্রতিষ্ঠান রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পাবে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের থেকে বিশেষায়িত অঞ্চলের ‘এ’ টাইপ বা বিদেশি এবং ‘বি’ টাইপ বা যৌথ মালিকানার প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানির বিপরীতে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পেয়ে আসছে। ৪৩ পণ্য রপ্তানিতে কোন পণ্য কী পরিমাণ নগদ সহায়তা পাবে বস্ত্রখাত: দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাক এর পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে চার শতাংশ হারে। তৈরি পোশাকখাতের (নিট, ওভেন ও সোয়েটার) অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধাও চার শতাংশ হবে। নতুন বাজার সম্প্রসারণে (আমেরিকা, কানাডা, ইউকে ব্যতীত) চার শতাংশ। ইউরোঞ্চলে বস্ত্রখাতে রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান চার শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা দুই শতাংশ এবং তৈরি পোশাকখাতে বিশেষ নগদ সহায়তা এক শতাংশ প্রযোজ্য হবে। কৃষি ও হাল্কা প্রকৌশল খাত: কৃষিপণ্য (শাকসবজি/ফলমূল) ও প্রক্রিয়াজাত (এগ্রোপ্রসেসিং) কৃষিপণ্য রপ্তানি খাতে রপ্তানি ভর্তুকি পাওয়া যাবে ২০ শতাংশ। হাল্কা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি খাতে ভর্তুকি হবে ১৫ শতাংশ। পাটজাত: পাটজাত দ্রব্যাদি রপ্তানি খাতে ৭ থেকে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। এর মধ্যে বৈচিত্রকৃত পাট পণ্য ২০ শতাংশ, পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) ১২ শতাংশ এবং পাট সুতা (ইয়ার্ন ও টোয়াইন) খাতে ৭ শতাংশ নগদ সহায়তা পাবে। পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানিতে ২০ শতাংশ। অ্যাক্টিভ ফার্মাসিটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্টস (এপিআই) রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি ভর্তুকি পাওয়া যাবে ২০ শতাংশ। শতভাগ হালাল মাংস ও শতভাগ হালাল পক্রিয়াকৃত মাংসজাত পণ্য রপ্তানি ভর্তুকি ২০ শতাংশ। মাছ রপ্তানি: হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানিতে নগদ সহায়তা মিলবে ২ থেমে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে বরফ আচ্ছন্নের ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১০ শতাংশ। আর হিমায়িতক অন্যান্য মাছ রপ্তানিতে ২ থেকে ৫ শতাংশ, কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানিতে ১০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন খাতসংশ্লিষ্টরা। চামড়া: চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে নগদ সহায়তা (সিলিং সীমা পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে) হবে ১৫ শতাংশ। আর সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে অবস্থিত কারখানা ও সাভারের বাইরে নিজস্ব ইটিপি রয়েছে এমন কারখানাগুলোয় উৎপাদিত ক্র্যাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানির বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রযোজ্য হবে। আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, ফার্নিচারে ১৫ শতাংশ, শস্য ও সবজি বীজে ২০, আগর ও আতরে ২০ শতাংশ, অ্যাকুমুলেট ব্যাটারি রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, সিনথেটিক ও ফেব্রিকস পাদুকা রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার/হার্ডওয়্যার ও আইটিএস রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিএস সেবা রপ্তানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৪ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, ফামাসিউটিক্যাল পণ্য (সার্জিক্যাল/মেডিকেল) ১০ শতাংশ, হাতে তৈরি পণ্য (হোগলা, ছোবড়া, খড় ইত্যাদি) ১০ শতাংশ, মহিষের নাড়ি-ভূড়ি, শিং, ও রগ (হাড় ব্যতিত) রপ্তানিতে ১০ শতাংশ ভর্তুকি পাবে। কেমিক্যাল পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ। প্লাস্টিক দ্রব্য: প্লাস্টিক দ্রব্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ। এছাড়া পেট বোতল-ফ্লেক্স ও পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলিউয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ সহায়তা পাবেন উৎপাদকরা। এছাড়া রেজার ব্লেডে ১০ শতাংশ, সিরামিক দ্রব্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, টুপি রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স- হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, চাল রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত চা রপ্তানিতে ৪ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত বাইসাইকেল রপ্তানিতে ৪ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত এমএস স্টিলে পণ্যে ৪ শতাংশ এবং দেশে উৎপাদিত সিমেন্ট শিটে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন উৎপাদকরা।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |