দুই বছরের মহামারির ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের বেসরকারি খাত
নিউজ ডেস্ক:
|
দুই বছরের মহামারির ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের বেসরকারি খাত। বাড়ছে বিনিয়োগ। ফলে বেড়েছে ঋণের চাহিদা। এতে করে গত কয়েক বছরে তলানিতে নেমে যাওয়া অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ‘বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি’ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শেষ তথ্য বলছে, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। এর অর্থ হলো ২০২১ সালের আগস্ট মাসের চেয়ে এ বছরের আগস্টে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা ব্যাংকিং খাত থেকে ১৪ শতাংশের বেশি ঋণ নিয়েছেন। আগের মাস জুলাইয়ে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০২২ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ফেব্রুয়ারিতে তা কমে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমে আসে। এর পর মার্চে আবার বেড়ে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে দাঁড়ায়। এর পরের মাস এপ্রিলে হয় ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং জুন মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে যা ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ বৃদ্ধির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে মুদ্রানীতিতে প্রাক্কলন কিছুটা কমানো হয়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বাড়ছে, তাতে প্রাক্কলনের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। সংশ্নিষ্টরা জানান, করোনা-পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অধিকাংশ পণ্যের দর বেড়েছে। যে কারণে এখন সব পর্যায়ে খরচ বেড়েছে। এ সময়ে নতুন করে অনেকে বিনিয়োগও করছেন। এসব কারণে গত এপ্রিলে এক নির্দেশনার মাধ্যমে চলতি মূলধন খাতে বিদ্যমান ঋণসীমা বাড়ানোর সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য এ নির্দেশনা কার্যকর করতে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে অবশ্য আমদানি ব্যয় কমাতে গত জুলাইয়ে কিছু পণ্য আমদানিতে ৭৫ থেকে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণ এবং এসব পণ্যে ঋণ দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। এর পরও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের আগস্ট শেষে বেসরকারি খাতে ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা, যা অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ছিল ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা। সংশ্নিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক কয়েক বছর বিনিয়োগ চাহিদা কম রয়েছে। সাধারণভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে থাকলেও ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা নেমে আসে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক কমে ২০২০ সালের মে শেষে প্রবৃদ্ধি নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে পরের মাস জুন থেকে একটু করে বাড়তে থাকে। সাধারণভাবে দীর্ঘদিন বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে ছিল। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা নেমে আসে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক কমে ২০২০ সালের মে মাসে নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |