ডিমের দামে সর্বোচ্চ 'রেকর্ড',এক হালি ডিম ৫০ টাকা
নিউজ ডেস্ক:
|
ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের প্রতি হালির দর উঠেছে ৫০ টাকা। হাঁসের ডিম কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ডিমও এখন চড়া দামের পণ্য। ঢাকায় বাসার কাছের মুদিদোকান থেকে ফার্মের মুরগির বাদামি এক হালি ডিম কিনতে লাগছে ৫০ টাকা। এতে একটি ডিমের দাম পড়ে সাড়ে ১২ টাকা। যাঁরা ডজন (১২টি) দরে ডিম কিনতে পারেন, তাঁদের দাম দিতে হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। খামারি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন দেশে এর আগে কখনো এত দামে মানুষকে ডিম কিনতে হয়নি। তাঁরা বলছেন, ২০০৯ ও ২০১০ সালে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল। কারণ ছিল 'বার্ড ফ্লু'। তখন এ রোগের কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে সরবরাহ–সংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে মুরগির ডিমের হালির গড় দাম ছিল ২৭ টাকার আশপাশে। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে গড় দাম ছিল ৪০ টাকার কিছু কম। ডিমের দাম যখন কম থাকে, তখন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম সাধারণত প্রতি হালি ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হয়। যখন বাড়ে, তখন তা ৪০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। বাংলাদেশ বাজারদরে দামে ‘রেকর্ড’, এক হালি ডিম এখন ৫০ টাকা। অর্থাৎ একটি ডিম সারে ১২ টাকা। ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের প্রতি হালির দর উঠেছে ৫০ টাকা। হাঁসের ডিম কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। যে টাকায় এক হালি ডিম পাওয়া যায়, তা দিয়ে মাছ-মাংস কোনোটিই কেনা সম্ভব নয়। ডিম খুব অল্প খরচে একটি পুষ্টিকর খাবারের উৎস। মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর এ দফায় সপ্তাহখানেক ধরে ডিমের দাম ব্যাপক চড়া। গতকাল শুক্রবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের হালিপ্রতি দর চাওয়া হয় ৪৭ টাকা। ঢাকার শেওড়াপাড়ার অলি মিয়ার টেক বাজারে একই ডিম বিক্রেতা প্রতি হালি ৫০ টাকার নিচে বিক্রি করেননি। একই বাজারের কাছের মুদিদোকানে প্রতি হালি চাওয়া হচ্ছিল ৫২ টাকা। সাদা ডিমের দাম সামান্য কম, কারওয়ান বাজারে হালি ৪৫ টাকা। হাঁসের ডিমের দাম আরও বেশি। কারওয়ান বাজারে প্রতি হালি ৬০ টাকা। আর অন্য বাজারে তা চাওয়া হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। দেশি মুরগির ডিম বিক্রেতারা প্রতি হালি ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা চান। ডিমের দাম কেন এতটা বাড়ল, জানতে চাইলে পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন বলেন, মুরগির খাবারের দাম এতটা বেশি যে ব্যয় সামলাতে না পেরে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মুরগির বাচ্চার চাহিদা কমে যায়, যা বাচ্চা উৎপাদনকারী অনেক হ্যাচারিকে বন্ধ হতে বাধ্য করে। এখন দাম বেশি পেয়ে খামার চালু হচ্ছে। ফলে বাচ্চা ফোটাতে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। ওদিকে উৎপাদন কম। খন্দকার মো. মহসিন আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে ভুট্টা আমদানি কমেছে। এতে দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কেজি এখন ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। সয়াবিন মিলের (সয়াবিনের খইল) দাম কেজিতে ৩২ থেকে বেড়ে ৬২ টাকা হয়েছে। এখন আবার ট্রাকভাড়াও বেড়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২২ অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। দেশে উৎপাদিত ডিম দিয়েই চাহিদা মেটে। পুষ্টিবিদদের মতে, ডিম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক খাদ্য। একটি সেদ্ধ ডিম থেকে সাধারণত ৭৭ ক্যালরি পাওয়া যায়, যা দীর্ঘ সময় শক্তি জোগায় এবং ক্ষুধা কমায়। এ ছাড়া একটি ডিমে প্রায় ৬ দশমিক ৩ গ্রাম উচ্চ মানের আমিষ, শরীরের বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহের আয়রন, ভিটামিন এ, বি, ডি, ই এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্যকারী ফলেটের মতো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। নিউজ ডেস্ক| দৈনিক আজবাংলা |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |