বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ডলার কারসাজি : ৬ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২, ১২:৪৩ রাত | অনলাইন সংস্করণ

ডলার কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দে‌শি-বি‌দে‌শি ৬টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দি‌য়ে‌ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ট্রেজারি বিভা‌গের প্রধানকে অপসারণ কর‌তে চি‌ঠি দেওয়া হ‌য়ে‌ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিঠি দেওয়া ব্যাংকগুলোর তা‌লিকায় বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সি‌টি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খা‌তের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দাম বা‌ড়ি‌য়ে‌ বি‌ক্রি ক‌রে‌ছে। এমন প্রমাণ পাওয়ায় তা‌দের সং‌শ্লিষ্ট কর্মকর্তা‌দের বিরু‌দ্ধে ব্যবস্থা নি‌তে নি‌র্দেশ দি‌য়ে‌ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়। এক বছরের বেশি সময় ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। তখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ও খোলাবাজারের দরের মধ্যে পার্থক্য ছিল কমই। বরং গোটা বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনে দর ধরে রাখতে চেষ্টা করেছে। তবে মহামারী করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আমদানি অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে খাদ্য, জ্বালানি, শিল্পের উপকরণের দর বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ডলারের সঙ্কট দেখা দেয়।

আমদানি খরচ বাড়ায় চলতি বছরের মে মাস থেকে দেশে ডলারের সঙ্কট চলছে। রফতানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে আমদানি দায় শোধ করা যাচ্ছে না। এর ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম। ডলারের সঙ্কট শুরু হলে গত জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক পরিদর্শক দল দেশী-বিদেশী ব্যাংকগুলো পরিদর্শন করে। এতে দেখা যায়, ব্যাংকগুলো ডলারের ক্রয় ও বিক্রয়ের যে ঘোষণা দিয়েছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে কেনাবেচা করছে। ডলার কেনাবেচায় দামের পার্থক্য (স্প্রেড) তিন টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আবার অনেক ব্যাংক ডলার ধারণের মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এর মাধ্যমে বেশি দামে ডলার বিক্রি করে ট্রেজারি বিভাগ মুনাফায় অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি করেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোর জবাব চেয়ে চিঠি পাঠায় বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ছয় ব্যাংকের এমডিদের কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ব্যাংক ছয়টির এমডিদের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক লিখেছে- ‘২০২১ সালের জানুয়ারি-মে মেয়াদের তুলনায় ২০২২ সালের একই সময়ে বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে উচ্চ মুনাফা অর্জনের জন্য বৈদেশিক বাজারকে অস্থিতিশীল করা হয়েছে। এ জন্য আপনাদের ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও এমন পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে বাংলাদেশের টাকার মান অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের সঙ্গে ব্যাংকগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার নেই। অনেকে ডলার কিনে ধরে রাখতে চাইছে। এ জন্য লাগামহীন দর বাড়ছে। এছাড়া প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকও কম আসছেন এখন। এ কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেশ কমে গেছে।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ