চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অমিত সম্ভবনাও নিয়ে আসছেঃ শিক্ষামন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:
|
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শুধু চ্যলেঞ্জ নয়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অমিত সম্ভবনাও নিয়ে আসছে। কাজেই আমি সম্ভাবনার দিকটাই দেখতে চাই, সেটার ওপরই জোর দিতে চাই। বৃহস্পতিবার ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) প্রতিষ্ঠার ১৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক বেশি নজর দিতে হবে। তবে আমরা যেটি চাই তা হলো, আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মনস্ক হবে। প্রযুক্তি বান্ধব শুধু নয় প্রযুক্তি ব্যবহারে ও উদ্ভাবনে দক্ষ হবে, সৃজনশীল ও মানবিক হবে। শুধু যা শিখবে তা শেখার মধ্যে নয়, সেটাকে ভালোভাবে প্রয়োগ করতে শিখবে। শুধু চাকরি খুঁজবেন তা নয় উদ্যোক্তাও হবেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের সবগুলো অভিষ্ঠ লক্ষ্য কাজে লাগাতে সামনে যে সময়টা আসছে তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। সবগুলো অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করবার জন্য কাজ করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকে বলছেন আজ যারা প্রাথমিকে ঢুকছে তারা যখন কর্ম জগতে প্রবেশ করবে এখকার কর্মজগতের প্রায় শতকরা ৬৫ ভাগ পেশা তখন হয়ত আর থাকবে না। কিন্তু অন্য কাজ তো থাকবে। তখন যে কাজ থাকবে সেই কাজের জন্য এখন নিজেদের তৈরি করি, আমাদের নতুন প্রজন্মকে তৈরি করি। তাহলে তো আর চ্যালেঞ্জ হবার কথা না। চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের তৈরি করা। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে তৈরি হতেই হবে। আমরা সে কাজটিই করছি। কাজেই আমি সম্ভাবনার দিকটাই দেখতে চাই, সেটার ওপরই জোর দিতে চাই। কাজেই আমরা সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই। এতে যা কিছু দরকার তা হচ্ছে শিক্ষা এবং মানসম্মত শিক্ষা। নতুন কারিকুলাম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, শুধু পড়লাম, মুখস্ত করলাম, পরীক্ষা দিলাম, নম্বর পেলাম, ওটা আর কাজে লাগাতে পারছি না, সেই শিক্ষা দিয়ে চলবে না। সে জন্য আমরা নতুন কারিকুলাম করেছি প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় পরিবর্তন নিয়ে আসছি। আমাদের শিক্ষাক্রম ভীষণ নিরানন্দ শিক্ষা। আনন্দের লেশ মাত্র নেই এর মধ্যে। আপনারা দেখবেন ঘুম থেকে উঠে বেশিরভাগ বাচ্চা স্কুলে যেতে চায় না। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমে আমরা চাই শিক্ষাটা হবে আনন্দময়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হবে আনন্দ নিকেতন। কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা নিয়ে দীপু মনি বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন— মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় দারিদ্র যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। সকল শিক্ষার্থীকেই যে উচ্চশিক্ষা নিতে হবে তার কোন মানে নেই। পৃথিবীতে কোথাও নেয় না। যত বেশি উন্নত দেশ দেখবেন তারা তত বেশি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপর বেশি জোর দিয়েছে। ভর্তিতে বেশি জোর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়। আমাদের এখানে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির একটা সমস্যা আছে। আমাদের এখানে মনে করা হয় যারা ডিপ্লোমা করেন তারা কম মেধাবী কিংবা তারা হয়ত অর্থনৈতিকভাবে ততটা স্বচ্ছল নন। সে জন্যই তরা ডিপ্লোমা পড়ছেন। কিন্তু ডিপ্লোমা পড়ে সঙ্গে সঙ্গে চাকরি পাওয়া যাচ্ছে। কয়জন অনার্স পাস করেই চাকরি পায়। বছরের পর বছর অপেক্ষা করেও চাকরি পান না। সে ক্ষেত্রে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন দরকার আছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জমি কোথাও কোথাও প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় জমি কম আছে। ডুয়েটের যে জমি আছে আমার মনে হয় তার চেয়ে বেশি দরকার। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বেশি জায়গা লাগে। কোন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম কতটুকু জমি দরকার চিন্তা করতে হবে। সবচেয়ে কম কতটুকুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কতটুকু দিতে পারি সেইভাবে চিন্তা করতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেড় একর, দুই একর, তিন একর তার মধ্যে তো অনেক কিছু করে ফেলছে। কোনও কোন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত ভালো মানের শিক্ষা দিচ্ছে। তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেই শ’ শ’ একর জমি হতে হবে তার কোনও মানে নেই। জমির ব্যবহার যৌক্তিক হতে হবে।
নিউজ ডেস্ক। দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |