গ্ল্যাডিওলাস ফুল চাষ করে হন স্বাবলম্বী
নিউজ ডেস্ক:
|
আমাদের দেশেও গ্ল্যাডিওলাস ফুল বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি এই ফুলটিও বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ছাদে কিংবা পারিবারিক ফুলের বাগানে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করতে চাইছেন। তারাও জেনে নিন সহজে গ্ল্যাডিওলাস ফুলের চাষ পদ্ধতি। গ্লাডিলাস ফুলের আকর্ষণীয় গঠন বেশ জনপ্রয়ি এবং দীর্ঘ সময় সজীব থাকার জন্য সকলের কাছে এই ফুলটি বেশ জনপ্রিয়। গ্ল্যাডিওলাস ফুলের বাজার চাহিদা বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ বেশ লাভজনক। বাড়ির ছাদবাগানে গ্ল্যাডিওলাস ফুলের চাষ খুব সহজেই করা যায়। গ্লাডিওলাস ফুলের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আর্দ্র ও ঠান্ডা আবহাওয়া প্রয়োজন। ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গাছ ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু চাষের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের আলো দরকার। কারণ ছায়ায় এ ফুল ভালো হয় না। কলম রোপণ এবং স্পাইক বের হওয়ার আগে মাটিতে আর্দ্রতার ঘাটতি হলে ফলন হ্রাস পায়। গ্ল্যাডিওলাস প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা আলো পছন্দ করে। তাই রৌদ্রজ্জ্বল জায়গা এবং ঝড়ো বাতাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা আছে এমন জায়গা এই ফুল চাষের জন্য উত্তম। সাধারণত যেকোন ধরনের উর্বর মাটিতেই গ্ল্যাডিওলাস চাষ করা যায়। তবে সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেঁলে দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ মান ৬ থেকে ৭ এর মধ্যে থাকা উচিত। অধিক কাদাযুক্ত এবং কালো মাটির জমিতে চাষ না করাই ভালো। হালকা মাটির ক্ষেত্রে জৈব সার মিশিয়ে মাটির গুণাগুণ ভালো করতে হবে। একই জমিতে বারবার গ্ল্যাডিওলাস চাষ করলে মাটি বাহিত রোগের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ফসলও চাষ করতে হবে। আমাদের দেশেও সারাবছর গ্ল্যাডিওলাস চাষ করা যায়। তবে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস হল এই বীজ বা গুঁড়িকন্দ বসানোর উপযুক্ত সময়। গুঁড়িকন্দ সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার হতে হবে। টবে গ্ল্যাডিওলাস চাষের জন্য প্রথমেই পরিমাণ মতো দো-আঁশ বা বেলে মাটির সঙ্গে গোবর, পাতাসার মিশিয়ে সারমাটি তৈরি করতে হবে। যার মধ্যে বীজ বপন করতে হবে। মাটি সবসময় ঝুরঝুরে থাকতে হবে। চারা গজানোর ৪ সপ্তাহ পর থেকে ২১ দিন অন্তর নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি নিয়ে তাতে কিছুটা ভি.এ.পি, কিছুটা ম্যাগেশিয়াম সালফেট, কিছুটা মিউরিয়েট অফ পটাশ দিতে হবে। তাতে ফুলে তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে। টবের মাটি ভালো থাকবে। তবে এঁটেল মাটির ক্ষেত্রে সার কম লাগবে। টবের মাটি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। কঞ্চি বা শক্ত লাঠি দিয়ে গাছগুলোকে ঠেকনা দিয়ে রাখতে হবে। এরপর সার হিসাবে চাপান বা তরল সার দিতে হবে। গ্ল্যাডিওলাস গাছে পানি দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে গোড়ায় পানি না জমে। নিয়ম করে মাটি খুঁচিয়ে দিতে হবে। আড়াই থেকে তিন বছর অন্তর ঝাড় তুলে মোটা বা বড় গুঁড়িকন্দগুলো আবার সারমাটি দিয়ে লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে মঞ্জুরী দণ্ডের শেষ জোড়া কুঁড়ি ফুটে গেলে দণ্ডের গোড়া থেকে কেটে দেওয়াই ভালো। গ্ল্যাডিওলাস গাছ ফিউজোরিয়াম রট, বট্রাইটিস রটসহ আরও কয়েকটি রোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়াও জাবপোকা, শোষক পোকা, ইউপোকা আক্রমণ করতে পারে। গাছের গোড়ার মাটিতে নির্দিষ্ট পরিমাণে কুপ্রাভিট অথবা ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে দিতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছে ১৫ থেকে ১৮ দিন পরপর ৩ বার এই মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ছত্রাক আক্রান্ত হলে, ফুলের বোটা নরম হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রতিমাসে একবার নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে ভালো হয়।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |