আমি কার ওপর বিশ্বাস রাখবোঃ শিক্ষা সচিব
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:৪৩ রাত | অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেছেন, আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে আছি। তিনজন শিক্ষক জেলে, একজন পলাতক। আমরা কাকে বিশ্বাস করবো? দুর্ভাগ্য এসব শিক্ষকদের অ্যারেস্ট না করে পারিনি। আমি কার ওপর বিশ্বাস রাখবো।

রাজধানীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন কৌশল পরিকল্পা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অংশীজনের সঙ্গে কর্মশালায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এসব কথা বলেন তিনি।

সচিব বলেন, আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে আছি। আজ শুদ্ধাচার নিয়ে কথা বলছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেছে। পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। প্রশ্নপ্রত্র আনা নেয়ার দায়িত্ব যার ওপর দিলাম শুনলাম তিনি বেশভুষায় ইসলামিক মানুষ। কোথায় বিশ্বাস করবো? ছাত্ররা কী শিখবে? শিক্ষকদের তো আমরা শাসন করতে পারি না। আমাদের একটা জাগরণ দরকার, রেঁনেসা দরকার।

আবু বকর ছিদ্দীক বলেন, সুশাসনের জন্য কথা বলছি। ফকির লালন বহুদিন আগে বলে গেছেন-সত্য কাজে কেউ নয় রাজি। এটাই আমাদের সমস্যা। শুদ্ধাচার হলো-গুড গভর্নেন্সের একটি টুল। আমরা যদি সুশাসন নিশ্চিত করতে চাই, তাহলে নিজেদের আচরণ শুদ্ধ হতে হবে। নিজেদের বিশুদ্ধ হতে হবে। এর বাইরে শুদ্ধাচারের কিছু নেই। 

শিক্ষক ও অংশীজনের উদ্দেশ্যে সচিব বলেন, যদি বিশুদ্ধ শিক্ষা না দিতে পারি, নিজেদের মনকে বিশুদ্ধ না করতে পারি তাহলে মানসম্মত শিক্ষা দেয়া যাবে না। আমাদের ভালো কারিকুলাম নেই, যা আছে তা কারিকুলামের মধ্যে পড়ে না। তৃতীয়ত আমাদের দরকার ভালো এসেসমেন্ট সিস্টেম।  

সচিব বলেন, কয়জন টিচারের কোয়ালিটি আছে? সেসিপে আছে গবেষণা কর্মকর্তা, উনাদের কি গবেষণা কোয়ালিটি আছে? রিসার্চ ম্যাথরোলজি কী জিনিস জানেন? তাহলে উনি কী গবেষণা করবেন? আমাদের ৪১ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এছাড়া অন্যান্য কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের কোয়ালিটি সঠিক আছে কিনা? আমরা এখন কোয়ালিটি ফ্রেমওয়ার্ক করছি।  কিন্তু বাঁশি যে বাজাবে, তাকে বাঁশি বাজানো শেখাচ্ছি না। তাকে শেখাচ্ছি বাঁশি লম্বা কতটুকু, বাঁশির ছিদ্র কয়টা, বাঁশি দেখতে কেমন এসব শেখাচ্ছি। বাঁশি বাজানো প্র্যাক্টিস ছাড়া কেউ শিখতে পারে না। এটা কিন্তু করাচ্ছি না। 

মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, দুর্নীতির একটা ভয়ংকর চক্র সারাদেশে। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা হলো- আমরা যারা শুদ্ধাচরের কথা বলি তারাই ভয়ঙ্কর অসৎ। ঘুষ যাতে না খায় সে জন্য নির্দেশ দিয়েছি। আমরা গৎবাঁধা কথা বলে গেছি। একটু চেঞ্জ হলে এগুতে বেশিদিন লাগবে না। আমরা অনেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি আওয়ামী লীগার হয়ে গেছি। ভাই, আপনার এতো আওয়ামী লীগার হওয়া দরকার কী? আপনি আপনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করেন। আমরা মুখে বলি কিন্তু নিজে বিশ্বাস করি না। আমি বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালে অনেক চেষ্টা করেছি, ২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেছি। জায়গা নেই, জমি নেই, ২৭টি প্রতিষ্ঠান আমি বন্ধ করে এসেছি। আরও আছে। বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে।  

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম শ আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে যিনি প্রশ্ন ফাঁস করেছেন তিনি একজন শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব। তাকে সহায়তা করেছেন অন্য শিক্ষকরা। একজন শিক্ষক যদি এমন ঘটনা ঘটান এর চেয়ে লজ্জার, হতাশার আর কিছু হতে পারে না। আমাদের 
নৈতিক অবস্থার কতটা নাজুক অবস্থা তা এই কর্মকাণ্ডে বোঝা যায়। এখন আমাদের প্রয়োজন শিক্ষার চেয়ে বেশি নৈতিক শিক্ষা।

জানা যায়, ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সহযোগিতা করবেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন। পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন তদন্ত কমিটি।

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 


প্রকাশক : মো: মিরাজুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদক: শফিকুল ইসলাম

© ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | আজ বাংলা মিডিয়া লিঃ এর একটি প্রতিষ্ঠান।

ই-মেইল: ajbanglaonline@gmail.com

বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭