সাগরে ৭ ট্রলারডুবিতে ৫১ জেলে উদ্ধার নিখোঁজ আরো ২১
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট ২০২২, ০৯:৫৮ রাত | অনলাইন সংস্করণ
|
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ভোলার চরফ্যাশন ও দৌলতখান, পটুয়াখালীর গলাচিপা ও বরগুনার পাথরঘাটায় পৃথক ৭টি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব ট্রলারে থাকা ৫১ জেলেকে উদ্ধার করা হলেও এখন নিখোঁজ রয়েছেন ২১ জেলে। বুধবার পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, পূর্ণিমার আগমন ও ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করা নিম্নচাপ লঘুচাপে রূপ নেয়ায় পানি বাড়ছে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার, নিজস্ব সংবাদদাতা ও সংবাদদাতাদের।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের ২১ জেলেসহ দুটি মাছধরা ট্রলার বঙ্গোপসাগরে ডুবে গেছে। এ সময় অন্য ট্রলারের মাধ্যমে ১৩ জেলেকে উদ্ধার করা হলেও ট্রলারডুবির একদিন পর বুধবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ ৮ জেলের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে পটুয়াখালী জেলার পায়রা বন্দরসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ২৫/৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও ঢালচরসংলগ্ন বঙ্গপসাগরে ২১ জেলে নিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের কালাম মাঝি ও ইউসুফ মাঝির ট্রলার দুটি ডুবে যায়। এ সময় ইউসুফ মাঝিসহ ৫ জেলেকে উদ্ধার করা হলেও ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে মোঃ রাসেল (৩৫), মোঃ মন্নান (৩৬), নজরুল (৪০), আব্দুর রহমান (৩৭), তসলিম (৩০), মোঃ ইসমাইল (৪০), জুয়েলের (৩২) নাম জানা গেছে। ওই ট্রলারে থাকা জেলেরা প্রত্যেকেই চরফ্যাশন উপজেলার বাসিন্দা।
অপরদিকে, ঢালচরের জেলে আবুল হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকালে ঢালচরসংলগ্ন বঙ্গপসাগরে ৮ জেলে নিয়ে ঢালচরের কালাম মাঝির মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এ সময় ৮ জেলেকেই অন্যান্য ট্রলারের মাধ্যমে জীবিত করা উদ্ধার হয়। অন্যদিকে, দৌলতখানের একটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনায় ট্রলারে থাকা সাত জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ রয়েছেন এক জেলে। নিখোঁজ জেলে মিজান (২৭) দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আবদুল মালেকে মালের ছেলে। তিনদিনেও তার সন্ধান মেলেনি। বুধবার সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোসলেউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইলিশা ফেরিঘাট তলিয়ে গেছে। এতে দুদিন ধরে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ৩৩ মাঝি নিয়ে রাঙ্গাবালীর তিনটি জেলে ট্রলার ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এর মধ্যে ৩১ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত বাকি দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন, নিখোঁজ দুই জেলের মধ্যে রাঙ্গাবালীর মৌডুবী ইউনিয়নের মাঝিকান্দা গ্রামের মনতাজ মুন্সির ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও গলাচিপা উপজেলার গজালিয়া গ্রামের আফসার মোল্লার ছেলে সিদ্দিক মোল্লা (৫০) রয়েছেন।
বরগুনা ॥ পাথরঘাটা থেকে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার সন্দ্বীপের এফবি নিশান ফিস নামের একটি ট্রলারডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আবুল কালামের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, কয়েক দিন আগে রসদসামগ্রী নিয়ে এফবি নিশান ফিস ট্রলারটি গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য যায়। নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় বুধবার সকাল ৮টার দিকে ট্রলারটি ডুবে যায়।
বাগেরহাট ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের প্রভাবে বাগেরহাটসহ উপকূলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। এখানে গত দু’দিন ধরে ঝড়োহাওয়ার সঙ্গে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সুন্দরবনসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় সাগরে টিকতে না পেরে অধিকাংশ ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহের আলীর চর, ভেদাখালীর অফিস খাল, কচিখালী, রাজেশ্বর, পূর্ব খোন্তাকাটা, রাজৈর, কুমারখালী, শরণখোলা, রায়েন্দা, রামপাল, মোংলা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। গভীর সাগর থেকে ফেরার সময় কুয়াকাটাসংলগ্ন বন বিভাগ, মৎস্যজীবী সংগঠন ও জেলেদের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বরিশাল ॥ জোয়ারের পানিতে কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, সন্ধ্যাসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। একই সঙ্গে বেশির ভাগ নদীও উত্তাল রয়েছে। কীর্তনখোলা নদীর জেলে ট্রলারের মাঝি মোঃ সালাউদ্দিন জানান, অতিজোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে কীর্তনখোলা তীরবর্তী চরবাড়িয়া, লামচড়ি, শায়েস্তাবাদের নিম্নাঞ্চলগুলো। সেই সঙ্গে বরিশাল শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা খালগুলোর পানি নিচু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে দিয়েছে। নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা |
ই-মেইল: ajbanglaonline@gmail.com
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭