শরীয়তপুরে যুবলীগের সভায় শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১, ১০:৪৮ রাত | অনলাইন সংস্করণ
|
শরীয়তপুরে যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে বলে সহকারী পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে শহরে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন ১০ জন। শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পালং মডেল থানার ওসি মো. আক্তার হোসেন ও জেলা যুবলীগের সূত্রে জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আজ ৫ অক্টোবর সকালে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে পৌরসভা মার্কেটের ভিতরে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক ডেপুটি স্পিকার মরহুম কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে ডা. খালেদ শওকত আলী। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল। জেলা যুবলীগের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুক্তা। সকাল থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন মিছিল আসতে থাকে। শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা শুরুর আগেই পালং উত্তর বাজারের শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস এলাকায় প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর বাচ্চু বেপারীর লোকজন ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র ও শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট পারভেজ রহমান জনের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও শতাধিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পথচারী চরপালং এলাকার মো. জাকির মাদবর (৩২), মো. শামীম মিয়া (৩৮), আক্তার হোসেন ঢালী (৪০), চয়ন বিশ্বাস (৩১), চন্দ্রপুর এলাকার তামিম ফকিরসহ (১৮) ১০ জন মারাত্মক আহত হন। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পালং মডেল তানা পুলিশ ২১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল। শরীয়তপুর পালং বাজারস্থ পৌরসভা মার্কেটের ভিতরে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা হওয়ায় সকাল থেকে পালং মধ্যবাজার, রাজগঞ্জ ব্রিজ, বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এদিকে বাইরে উত্তেজনা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হলেও বর্ধিত সভায় শুধু ডেলিগেটদের ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, জেলার ব্যস্ততম শহরের পৌরসভা মার্কেটে দলীয় প্রোগাম করলে এমনিতেই আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়। তার ওপরে আবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর শহরজুড়ে অস্ত্রের মহড়ায় আতঙ্কে আমরা দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছি। শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন বলেন, গত দুই দিন ধরেই প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর বাচ্চু বেপারীর লোকজন আমার লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী যখন শরীয়তপুর আসেন তখন আমার লোকজন তার কাছে যাচ্ছিল। তখন অতর্কিতভাবে বাচ্চু বেপারী তার লোকজন নিয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা আমার সমর্থকদের ৫-৬টি গাড়ি ভাংচুর করে। প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর বাচ্চু বেপারীকে বারবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পালং মডেল থানার ওসি মো. আক্তার হোসেন বলেন, যুবলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের কারণে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখেছিল। এখন আমরা তা খুলে দিয়েছি। শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এসএম মিজানুর রহমান বলেন, ফায়ার সার্ভিস এলাকায় যুবলীগের দুই গ্রুপের সমর্থকরা ১৫-২০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে উত্তেজিত কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। |
ই-মেইল: ajbanglaonline@gmail.com
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭