ডিসেম্বরে ফাইভজি যুগে প্রবেশ বাংলাদেশের
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৩৪ দুপুর | অনলাইন সংস্করণ
|
এবার ফাইভজি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল কম্পানি টেলিটকের মাধ্যমে পঞ্চম প্রজন্মের এই টেলিযোগাযোগ সেবা পরীক্ষামূলক চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে উচ্চগতির ইন্টারনেট, স্মার্টসিটি, ইন্টারনেট অব থিংকসের (আইওটি) পাশাপাশি শিল্পের অটোমেশনে বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বলেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশে ফাইভজি সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশের পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলেও এই সেবা পৌঁছে দেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। টেলিটক বাদে অন্য মোবাইল অপারেটরের জন্য ডিসেম্বরে ফাইভজি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।
আমেরিকার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভিয়াভির ‘দ্য স্টেট অব ফাইভজি’ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৬৫ দেশের এক হাজার ৬৬২টি শহরে ফাইভজি সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২০২১ সালে এখন পর্যন্ত এ সেবা ২০ শতাংশ বেড়েছে। ফাইভজি সেবায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। দ্বিতীয় অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় ফিলিপাইন। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে আমার খাতের প্রতিশ্রুতি ছিল একটি সাবমেরিন কেবল, একটি স্যাটেলাইট আর ফাইভজি। সব ক্ষেত্রেই আমরা অন ট্র্যাক কাজ করছি। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে ফাইভজি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে স্মরণীয় করতে ১৬ই ডিসেম্বর চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফাইভজি শুধু উচ্চগতির ডিজিটাল সংযোগই নয়, এটি ডিজিটাল যুগের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাকবোন (মেরুদণ্ড)। এটি ব্যবহার করে জীবনের সব ক্ষেত্রে—কৃষি ও শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করে একটি নতুন যুগ তৈরি করবে। সেটি হবে কৃষি, শিল্প ও তথ্য যুগের পরের যুগ।’
সূত্র জানায়, ফাইভজির জন্য দেশজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন ফাইবার অপটিকের প্রয়োজন হবে, তা প্রস্তুত করতে এরই মধ্যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিটিসিএল। ‘ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি উন্নয়ন ও রিডানডেন্সি বৃদ্ধীকরণ (ফাইভজি রেডিনেস)’ নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৮ সালের ২৫ জুলাই বাংলাদেশে ফাইভজি সেবা পরীক্ষায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। তখন ৮০০ মেগাহর্স স্পেকট্রাম ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ চার জিবি পর্যন্ত ইন্টারনেটের গতি পাওয়া গিয়েছিল। সর্বশেষ তারা গত ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় হুয়াওয়ের সর্বশেষ ফাইভজি প্রদর্শনীতে ১.৬ জিবিপিএস গতির সাক্ষী করে ঢাকাকে।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ডংজিয়ান শু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নেটওয়ার্ক, স্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক এবং অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী ফাইভজির অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছে। বৈশ্বিক সেবাদাতা হিসেবে বাংলাদেশে আইসিটি সমাধান ও সেবা নিশ্চিত করছি।’
ফাইভজি প্রযুক্তির সুবিধা: ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে স্মার্টফোনের কানেক্টিভিটি ফোরজির চেয়ে ২০ গুণ বেশি হয়। এমনকি ব্যবহারকারী একটি মুভি ডাউনলোড করে ফেলতে পারেন এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে। ফাইভজির মাধ্যমে হাই ডেফিনেশন বা উন্নততর ভিডিও চিত্র আদান-প্রদান সম্ভব হয় খুব সহজে। ফলে টেলি-চিকিৎসা, টেলি-ক্লাসরুমের মতো পদ্ধতিগুলো যেমন আরো জনপ্রিয় হচ্ছে, তেমনি ‘স্মার্ট সিটি’র নতুন ধরনের সেবাও চালু হচ্ছে অনেক দেশে।
দরকার হবে ফাইভজি ডিভাইস : এই সুবিধা পেতে ফাইভজি স্মার্টফোন লাগবে। এরই মধ্যে দেশের বাজারে কয়েকটি ব্র্যান্ড এই স্মার্টফোন এনেছে। দেশেও তৈরি হচ্ছে ফাইভজি স্মার্টফোন।
রাজনীতি/জেকে
|
ই-মেইল: ajbanglaonline@gmail.com
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭