সোমবারে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা শুরু
নিউজ ডেস্ক:
|
অক্টোবরের শুরু মানেই নোবেল পুরস্কারের মৌসুম। সোমবার থেকে নতুন বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হবে; যা চলবে ছয় দিন। পুরো বিশ্ব থেকে ছয় বিষয়ের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। বিজ্ঞানী, লেখক, অর্থনীতিবিদ এবং মানবাধিকার নেতাদের মধ্য থেকে এবারে বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত এই পুরস্কারের তালিকায় নতুন কিছু মুখ যুক্ত হতে পারে। সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণার মাধ্যমে এবারের নোবেল পুরস্কার মৌসুমের সূচনা হবে। এরপরই মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞান, বুধবার রসায়ন এবং বৃহস্পতিবার সাহিত্যের নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার আগামী শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এবং ১০ অক্টোবর অর্থনীতিতে বিজয়ী ঘোষণার মাধ্যমে এবারের নোবেল পুরস্কারের পর্দা নামবে। লোভনীয় আর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার সম্পর্কে যে পাঁচ তথ্য আপনার জানা দরকার... নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেছিলেন কে? • চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য এবং শান্তিতে পুরস্কারের যাত্রা শুরু হয়েছিল আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছায়। সুইডিশ শিল্পপতি, ধনকুবের ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেডের নামে এই পুরস্কারের প্রবর্তন শুরু হয়। আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। • প্রতিটি পুরস্কারের মূল্য ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ৯ লাখ ডলার)। ১৮৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেল মারা যান। • অর্থনীতির পুরস্কার মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতিতে প্রবর্তন করেছে ব্যাংক অব সুইডেন। ১৯৬৮ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই পুরস্কার চালু করে। • ১৯০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নোবেল এবং অর্থনীতির পুরস্কার মোট ৬০৯ বার দেওয়া হয়েছে। কে, কেন জিতবে এবং জানেন কে? • নোবেল বিধি অনুযায়ী, পুরস্কার বিজয়ীদের ব্যাপারে ৫০ বছর পর্যন্ত কোনও ধরনের আলোচনা করতে পারেন না বিচারকরা। যে কারণে ২০২২ সালের জন্য বিচারকরা কীভাবে বিজয়ীদের বাছাই করেছেন এবং কারা তাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন তা নিশ্চিতভাবে জানার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। •বিচারকরা ঘোষণার আগে বিজয়ীদের সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়ার বিষয়টিও কঠোরভাবে এড়িয়ে চলেন। তবে মাঝে মাঝে কিছু তথ্য প্রকাশ হয়েই যায়। ইউরোপের বুকিরা কখনও কখনও শান্তি এবং সাহিত্যের সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করেন। প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেন কারা? • বিশ্বের নানা প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। এই ব্যক্তিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইনপ্রণেতা, পূর্ববর্তী নোবেল বিজয়ী এবং কমিটির সদস্যরাও রয়েছেন। •প্রত্যেক বছর মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য গোপন রাখা হয়। তবে যারা মনোনয়ন জমা দেন তারা অনেক সময় নিজেদের মনোনীত ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন— বিশেষ করে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য। নরওয়েজীয় সংশ্লিষ্টতা কেন? • শান্তির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় নরওয়েতে। আর অন্যান্য পুরস্কার দেওয়া হয় সুইডেনে। আলফ্রেড নোবেলও এভাবেই পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। • আলফ্রেড নোবেলের এই ইচ্ছার সঠিক কারণ এখনও অজানা। তবে তার জীবদ্দশায় সুইডেন এবং নরওয়ে একটি ইউনিয়নে যোগ দিয়েছিল; যা ১৯০৫ সালে ভেঙে যায়। অনেক সময় পুরস্কারের অর্থদাতা সংস্থা স্টকহোমের নোবেল ফাউন্ডেশনের সাথে অসলোর স্বতন্ত্র শান্তি পুরস্কার কমিটির সম্পর্কে উত্তেজনাও দেখা দেয়। নোবেল জিততে কী লাগে? • প্রথমত ধৈর্য। নোবেল কমিটির বিচারকদের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কখনও কখনও বিজ্ঞানীদের দশকের পর দশক ধরে অপেক্ষা করতে হয়। • আলফ্রেড নোবেলের উইল অনুযায়ী, পূর্ববর্তী বছরগুলোতে যারা মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণ সাধনে কাজ করেছেন; তাদের কাজের স্বীকৃতি অগ্রাধিকার পাবে। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটিই একমাত্র নিয়মিতভাবে পূর্ববর্তী বছরের অর্জনের স্বীকৃতি দেয়। আরও যা জানা প্রয়োজন নোবেল কমিটি বলেছে, চলতি বছরে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩৪৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন। এর আগে, যারা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস (২০০৬), ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী ও পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই (২০১৪), মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (২০০৯), নেলসন ম্যান্ডেলা ও এফডব্লিউ ডি ক্লার্ক (১৯৯৩), চতুর্দশ দালাই লামা তেনজিন গ্যাৎসো (১৯৮৯) এবং মাদার তেরেসা (১৯৭৯)।
নিউজ সূত্রঃ আলজাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |