লেনদেনে ডলারের দাম পুনঃনির্ধারণঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক
নিউজ ডেস্ক:
|
আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের প্রকৃত দর প্রকাশ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার ডলার বিক্রির দর দেখানো হয়েছে ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। আর কেনায় ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা। সোমবারও কেনা ও বিক্রি ৯৫ টাকা দেখানো হয়। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) তথ্যের ভিত্তিতে এই দর প্রকাশ করা হয়েছে। এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে যে দরে ডলার বিক্রি করতো সেটিকেই আন্তঃব্যাংক দর হিসেবে প্রকাশ করতো। বিক্রি ও কেনার দর দেখানো হতো অভিন্ন। সংশ্লিষ্টরা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার ভিত্তিক দর প্রকাশের অংশ হিসেবে বাফেদার আন্তঃব্যাংক দর প্রকাশের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে অকার্যকর হয়ে পড়া আন্তঃব্যাংক লেনদেন কার্যকর করতে চাইছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ডলারের ব্যাপক সঙ্কট শুরুর পর গত চার মাস ধরে আন্তঃব্যাংকে লেনদেন হচ্ছে না। প্রকৃত দর আড়াল করে অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণের ফলে এমন হচ্ছে। তারা আরও জানান, ডলারের দর অনেক বাড়লেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তঃব্যাংক লেনদেনে একটা দর ঠিক করে দিচ্ছিল। এখন প্রকৃত দরের ভিত্তিতে অকার্যকর হয়ে পড়া আন্তঃব্যাংক বাজার ঠিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরুতেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকই বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় ডলার বিক্রি করেছিল। প্রতি ডলারে ১০টাকা ২০ পয়সা বাড়িয়ে এখন ৯৬ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর ব্যাংকগুলোতে চলতি বছরের শুরুতে যেখানে ৯০ টাকার আশ-পাশের দরে ডলার বিক্রি হচ্ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে তা বেড়ে ১১৪ টাকা পর্যন্ত উঠে। এরকম পরিস্থিতিতে বাজারে অস্থিরতা কাটানোর চেষ্টা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌখিক নির্দেশে ডলার কেনার একটি সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করেছে ব্যাংকগুলো। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)রোববার যৌথ সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়, সোমবার থেকে রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি বিল নগদায়নে ৯৯ টাকা দেওয়া হবে। রপ্তানি বিল নগদায়ন ও রেমিট্যান্সের যে গড় দর দাঁড়াবে তার সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানি দায় নিষ্পত্তি করা হবে। ডলার বাজারের অস্থিরতা কাটাতে এর আগে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়নি। বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল করতে আমদানি ব্যয় কমানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত মোট বিক্রি ছাড়িয়েছে ২৮৭ কোটি ডলার। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গত বৃহস্পতিবার ৩৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। গত বছরের আগস্টে যেখানে রিজার্ভ উঠেছিল সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের জুলাইতে রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করার পর আর কমেনি।
নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |