শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশের পরবর্তী সেরা ব্যাবসা হবে শিপিং বিজনেস!
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ আগস্ট ২০২২, ০৯:০৮ রাত | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের পরবর্তী সেরা ব্যাবসা হবে শিপিং বিজনেস!

ছবি । সংগৃহীত

বাংলাদেশের শিপিং কর্পোরেশন এর অধীনে ধুকতে থাকা পুরাতন জাহাজ যখন একের পর এক অবসরে পাঠানো হচ্ছিল, আমাদের সামনে বিকল্প তেমন ছিলনা। 

বৈদেশিক বাণিজ্য যেখানে $১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে (এর ৯০% সমুদ্র পথে), শুধুমাত্র জাহাজ ভাড়া দিতেই বাংলাদেশকে খরচ করতে হয় ৩০,০০০ কোটি টাকার বেশি! 

কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর এগিয়ে আসায় পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। জাহাজের সংখ্যা যখন কমতে কমতে ১৫ এর নিচে সেখান থেকেই ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মাত্র কয়েক বছরেই সরকারি বেসরকারি জাহাজের বহরে নতুন জাহাজ যুক্ত হতে থাকে। বর্তমানে দেশে সমুদ্রগামী জাহাজ এর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৮০ টি। শুধুমাত্র বিগত ৪ বছরেই যুক্ত হয়েছে ৫৬ টি জাহাজ!

দেশের শিপিং কোম্পানিগুলি ভাড়া বাবদ আয় করেছে ৩,১১০ কোটি টাকা!

এবার আসা যাক ভিন্ন প্রসংগে। 

বর্তমানে বিশ্বে জাহাজের মালিকানার বিবেচনায় বাংলাদেশ খুব দ্রুত উপরে উঠে এসেছে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৯ তম যেখানে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যথাক্রমে ১৬ তম, ৮৭ তম ও ৮৭ তম। 

এবার আরেকটা ছোট উদাহরন দেয়া যাক। বাংলাদেশের মোট ৮০ টা জাহাজের ভেতর মাত্র ৬ টি হচ্ছে কন্টেইনারবাহী জাহাজ। আর এই ৬ টি জাহাজের মালিক বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান H. R. Lines। বাংলাদেশের কন্টেইনার পরিবহনের সিংহভাগ দখল করে আছে Maersk।  কিন্তু মজার বিষয় হল, বিশ্বের কন্টেইনার ভেসেল কোম্পানির লিস্টে বাংলাদেশের পতাকাবাহী এইচ আর লাইন্স ৭১ তম স্থান দখল করে আছে। ১০০ কোম্পানির মধ্যে সাউথ এশিয়ার শুধু আরেকটি কোম্পানি আছে। সেটা ভারতের সরকারি শিপিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। তবে তাদের অবস্থান বাংলাদেশের নিচে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের উপরে কারো অবস্থান নেই। 

এইচ আর লাইনের বর্তমান সক্ষমতা ৬ জাহাজে ৯০০০ টুয়েন্টি ফিট কন্টেইনার। বর্তমানে তারা মাসে ১৭০০০ কন্টেইনার পরিবহন করতে পারে। খুব শিঘ্রই এই কোম্পানিতে আরো ১৭৪০০ কন্টেইনার সক্ষমতার ৬ টি জাহাজ যুক্ত হতে যাচ্ছে। 

চট্টগ্রাম থেকে কন্টেইনার জাহাজ চীন, সিংগাপুর,  শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ৯ ইতালি যায়। এসব রুটে ২৫ কোম্পানির ৮৫ টি জাহাজে ১,৫০,০০০ কন্টেইনার বহনের সক্ষমতা রয়েছে। এখানে বাংলাদেশের জন্য বড় একটি বাজার রয়েছে ধরার মত। 

বাংলাদেশ ফ্লাগ ভেসেল প্রটেকশন অর্ডিনেন্স জারি হয় ২০১৯ সালে যেখানে এখন বাধ্যতামূলক কমপক্ষে ৫০% সমুদ্রগামী কার্গো বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজে নেয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে। আর এর ফলেই ধেয়ে আসছে দেশি বিনিয়োগ। 

বিশ্বে এখন শিপিং খরচ বেড়ে গেছে। বুকিং দিয়েও জাহাজ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে লিড টাইম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ খুব সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ শিপং কস্ট কমিয়ে আনতে এবং লিড টাইম কমিয়ে আনতে ইউরোপের সাথে সরাসরি সমুদ্রপথে সংযোগ চালু করেছে। সম্প্রতি সোঙ্গা চিতা নামে জাহাজ প্রথম চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গিয়েছে ইতালির উদ্দেশ্যে। এতে আগে যেখানে ৪০ দিন সময় লাগত সেটা ২৪ দিন কমে মাত্র ১৬ দিন লাগবে। শিপিং কস্ট কমবে ৪০%। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। 

শিপিং এর জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমাতে পারলে শুধু ভাড়া বাবদ কয়েক বিলিয়ন ডলার কমানো সম্ভব। সেই সাথে সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা কমিয়ে আনা যাবে। 

এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। 

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ