শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পূর্বাচল প্রকল্পে আর সময় বৃদ্ধি নয়ঃ পূর্তসচিব
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: রবিবার, ০২ অক্টোবর ২০২২, ০১:০৮ রাত | অনলাইন সংস্করণ
পূর্বাচল প্রকল্পে আর সময় বৃদ্ধি নয়ঃ পূর্তসচিব

ছবি । সংগৃহীত

আর সময় বৃদ্ধি নয়, পূর্বাচলের অসম্পন্ন কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন। 

শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল প্রকল্পের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সরেজমিন পরির্শনে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা প্রদান করেন।  

কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমানো এবং মানুষকে সুন্দর আবাসিক এলাকা উপহার দিতে সরকার পূর্বাচল প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অনেক সময় পার হয়েছে। ঢিমেতালে কাজ করে প্রকল্পকে আর দীর্ঘায়িত করা চলবে না। যে প্রতিষ্ঠান যেই কাজ যে সময়ে করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাকে সেই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। নইলে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, পূর্বাচল প্রকল্পে পানি সরবরাহ সেবা দিতে রাজউক স্বতন্ত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রাথমিকভাবে ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে পানি উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে পানি সংগ্রহ ও সরবরাহ করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে পূর্বাচল প্রকল্পে ৪০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ সেবার পাইপ লাইনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর উন্নত অনেক শহরে খাবার ও রান্নার পানি সরবরাহ এবং অন্যান্য পানি সরবরাহ সেবা লাইন পৃথক। পূর্বাচল যেহেতু নতুন উপশহর এবং আধুনিক সিটি। এখানে সেটা করা যায় কিনা, সেটা ভেবে দেখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আর পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে ঢাকা ওয়াসার মতো এখানেও যেন কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।  

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবের পরিদর্শনের সময় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, পূর্বাচল প্রকল্পটি ৬ হাজার ২২৭ একর জায়াগা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিংহ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ৩২০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৯০ কিলোমিটার তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। 

সংশোধিত সময়সীমা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। সার্বিক কাজ যেভাবে চলছে সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। পূর্বাচল প্রকল্পের বাসিন্দাদের জন্য প্রতি এক হাজার লিটার বা এক ইউনিট পানির দাম আবাসিকে ২০ টাকা এবং বাণিজ্যিকে ৪৫টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান। 

এসময় সচিব আবাসিক ও বানিজ্যিকের ব্যবধান না রাখার বিষয়টি ভেবে দেখতে বলেন। কেননা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত সেবামূল্য অনেক ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা পূর্ত সচিবকে আরও জানান, পূর্বাচলে সড়ক, বিদ্যুৎ, পানি সেবার নিশ্চিত করা সম্ভব হলেও এখনো পয়ঃবর্জ্য সেবা নিশ্চিত করার কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি রাজউক। এক্ষেত্রে প্রত্যেক ভবনে সেফটিক ট্যাঙ্ক নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করতে নির্দেশনা দেন পূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন। 

তিনি বলেন, নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে এটা কঠোরভাবে দেখতে হবে। পাশাপাশি ভবন নির্মাণের সময়ও সার্বিক বিষয় নিখুঁতভাবে রাজউকের পরিদর্শক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দেখভালের নির্দেশনা প্রদান করেন। আর পূর্বাচলে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) কিভাবে করা যায়-উন্নত শহরগুলোর নিয়ম-কানুন দেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে একনজরে হিসাব জানতে চান পূর্ত সচিব। এসময় প্রকল্পের প্রায় ২ হাজার প্লটের অনলাইনভুক্ত না হওয়ার হিসাব জানতে পারেন। এসময় তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল প্লট অনলাইনভুক্তকরণ এবং প্রকল্পের সকল তথ্য একনজরে আনার নির্দেশ প্রদান করেন। আগামী মাসের মধ্যে সকল নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে সচিবকে অবহিত করতে নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি পূর্বাচল শহরের সকল কার্যক্রম বাস্তবায়নের সুষ্ঠু মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ের তাগিদ দেন। 

এক্ষেত্রে পরিকল্পনাবিদদের সহযোগীতা নেওয়ার পরামর্শ দেন। আর পূর্বাচলে ১০০তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু আইকনিক টাওয়ার নির্মাণের ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

শনিবার পূর্বাচলে চারঘন্টার বেশি সময় পরিদর্শনকালে ওই এলাকা দিয়ে কোন বিমান চলাচল লক্ষ্য করা যায়নি-এ বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে এখানে শততলা বিশিষ্ট একটি টাওয়ার নির্মাণ করা সম্ভব হলে সেটা দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।  

পূর্বাচল প্রকল্প পরিদর্শনকালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন-পূর্বাচল ১০০ ফুট খাল প্রকল্প, ব্রিজ নির্মাণ কাজ, পানি সরবরাহ লাইন, ১০০ তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু আইকনিক টাওয়ার স্থাপন, সড়ক ও নর্দমা নির্মাণ কাজ ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় কাজের প্যাকেজ অনুযায়ী কোনটি কোন সময়ে শেষ করার কথা সেই সময়ের মধ্যে শেষ করতে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন।   

এসময় রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের বোর্ড সদস্য এবং মন্ত্রণালয় ও রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

 

নিউজ ডেস্ক | দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ