পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল অ্যারন ফিঞ্চের দল
নিউজ ডেস্ক:
|
দুই যুগ পর পাকিস্তান সফরে এসে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজের শুরুটাও দুর্দান্ত হলো অস্ট্রেলিয়ার। রঙিন পোশাকে পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে নেমে অলরাউন্ড পারফর্মেন্স দেখিয়েছে অজিরা। তাতে বাবর আজমদের উড়িয়ে দিয়ে ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল অ্যারন ফিঞ্চের দল।
মঙ্গলবার লাহোরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অ্যারন ফিঞ্চের দল জিতল ৮৮ রানে। ট্রাভিস হেড ঝড়ো সেঞ্চুরির পরে বোলিংয়েও ছড়ালেন আলো। জবাবে ইমাম-উল-হক দারুণ সেঞ্চুরি পেলেও যথেষ্ট হলো না লড়াই। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ট্রাভিস হেড ৭২ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় খেলেন ১০১ রানের ঝকঝকে ইনিংস। সঙ্গে বেন ম্যাকডারমটের ফিফটি ও ক্যামেরন গ্রিনের ৪০-এ সফরকারিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৩ রান। জবাবে ইমামের সেঞ্চুরি ও বাবর আজমের ফিফটির পরও পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে।
ইনজুরি ও করোনা হানার মধ্যেই একাদশ সাজায় অস্ট্রেলিয়া। দল থেকে ছিটকে পড়েন জশ ইংলিশ ও অ্যাস্টন আগার। এতে ১৩ জনের স্কোয়াড থেকে একাদশ সাজায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে কঠিন পরিস্থিতি বুঝতে দেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। শুরু থেকেই পাকিস্তানের বোলারদের ওপর চড়াও হন হেড। এতে মাত্র ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি।
হেডের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১৪তম ওভারে শতরানে পৌঁছায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ১৫তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন পাকিস্তানের অভিষিক্ত ক্রিকেটার জাহিদ মাহমুদ। ৩৬ রান করা ফিঞ্চকে থামান লেগ-স্পিনার জাহিদ।
১১০ রানের প্রথম উইকেট পতনের পর অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন হেড ও বেন ম্যাকডারমট। এই জুটি ৬২ বলে ৬১ রান যোগ করেন। ৭০ বলে সেঞ্চুরি করেন নেন হেড। ৪৩ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো সেঞ্চুরি পেলেন হেড।
সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরপরই আউট হন হেড। পেসার ইফতেখার আহমেদের বলে আউট হওয়া হেড ৭২ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় করেন ১০১ রান করেন।
হেডের দেখানো পথে হেঁটে অস্ট্রেলিয়াকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দলের পরের দিকের ব্যাটাররা। ম্যাকডারমট ৭০ বলে ৫০, মার্নাস লাবুশেন ২৫ ও মার্কাস স্টয়নিস ২৬ রান করেন। আর শেষ দিকে ক্যামেরুন গ্রিনের ৩০ বলে অপরাজিত ৪০ রান অস্ট্রেলিয়াকে বড় স্কোর পেতে সহায়তা করে। ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন গ্রিন।
৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৩ রান পায় অসিরা। পাকিস্তানের হারিস রউফ-জাহিদ ২টি এবং ইফতেখার-খুশদিল শাহ ১টি করে উইকেট নেন।
রান তাড়ায় পাকিস্তান শুরুতেই হারায় ফখর জামানকে। অ্যাবটের বলে মিড অফে হেডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি ১৮ রান করে।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন ইমাম ও বাবর। ১৫ রানে পৌঁছে বাবর এই সংস্করণে দ্বিতীয় দ্রুততম ৪ হাজার রান পূর্ণ করেন ৮২ ইনিংসে। পাকিস্তান অধিনায়ক ফিফটি করেন ৬৬ বলে। এরপর আর বেশিক্ষণ টেকেননি। সোয়েপসনকে সুইপ করার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন ৫৭ রানে। ৭২ বলে ৬ চারে গড়া তার ইনিংসটি। ৯৬ রানের এই জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। সৌদ শাকিল, রিজওয়ান, ইফতিখার টিকতে পারেননি। ইমাম এক প্রান্তে চালিয়ে যান লড়াই। ৫৭ বলে ফিফটির পর তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি ৯২ বলে। এরপরই এলিসের ইয়র্কারে বোল্ড হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় গড়া তার ইনিংস শেষ হওয়ার পর পাকিস্তান দ্রুতই বাকি ৪ উইকেট হারায়। শেষ পর্যন্ত ৪৫.২ ওভারে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে। তাতে এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরেকটি হারের স্বাদ পেল বাবর আজমরা। ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসন ও অফ স্পিনার হেড নেন ২টি করে উইকেট। ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড। একই মাঠে আগামী বৃহস্পতিবার হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |