শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নতুন করে বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্সের যাত্রা শুরু ‘পরাণ’ দিয়ে
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০২২, ০৬:১৮ বিকাল | অনলাইন সংস্করণ

দর্শক–খরায় টানা ছয় বছর বন্ধ থাকার পর বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নওয়াব পরিবারের প্রতিষ্ঠিত ‘বাম্বী’ সিনেমা হল গতকাল শুক্রবার থেকে নতুন আঙ্গিকে চালু হয়েছে। নাম আংশিক পাল্টে হয়েছে ‘বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স’

দর্শকের অভাবে একের পর এক সিনেমা হল যখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হল ভেঙে বিপণিকেন্দ্র ও আবাসিক ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে; তখন বগুড়ায় সিনেমা হল ব্যবসার সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। দর্শক–খরায় টানা ছয় বছর বন্ধ থাকার পর বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নওয়াব পরিবারের প্রতিষ্ঠিত ‘বাম্বী’ সিনেমা হল গতকাল শুক্রবার থেকে নতুন আঙ্গিকে চালু হয়েছে। নাম আংশিক পাল্টে হয়েছে ‘বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স’। আসনসংখ্যা ১ হাজার থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে ১৬০-এ।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বেলা তিনটায় বৈকালিক শোতে বাম্বীর রুপালি পর্দায় আলো জ্বলে উঠেছে। মুক্তি পেয়েছে রায়হান রাফি পরিচালিত ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ঘিরে নির্মিত ‘পরাণ’ সিনেমাটি। প্রথম দিন থেকেই দর্শকের আগ্রহ দেখা যায় এ ছবির প্রতি। নবরূপে পর্দা ভরে উঠেছে রঙিন আলোয়, নতুন সাউন্ড সিস্টেমে গমগম করে উঠেছে হলের ভেতরটা। বড় পর্দার সিনেমার ভুবনে দর্শকের সাড়াও মিলেছে বেশ।

১৯৮৮ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন-সুচিত্রা, ওয়াসীম-রানী অভিনীত ও গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত ‘জবরদস্ত’ সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করে বাম্বী। তখন হলটির ধারণক্ষমতা ছিল এক হাজার। যাত্রা শুরুর পর থেকেই বাম্বী ছিল ‘হাউসফুল’। এরপর বাম্বীর পর্দায় ব্যবসাসফল ছবির তালিকা বেশ দীর্ঘ। নব্বইয়ের দশকে বাম্বীর মালিকানা নওয়াব পরিবারের কাছ থেকে হাতবদল হয়। তবে চালু ছিল সিনেমা হলটি। ২০০৫ সালের পর দর্শক–খরায় মন্দা শুরু হয় সিনেমা হলের প্রদর্শন ব্যবসায়। দর্শক–খরায় ২০১৬ সালে পি এ কাজল পরিচালিত এবং মান্না-জনা অভিনীত ‘আমি একাই একশো’ ছায়াছবি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে বাম্বী সিনেমা হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। টানা ছয় বছর বন্ধ থাকার পর সিনেমা হলে দর্শক ফেরার নতুন আশায় চালু হয়েছে বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স।

বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন রানা প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৫ সালের পর বাম্বী হাউসফুল হয়নি। দর্শক–খরা ও লোকসানে ২০১৬ সাল থেকে টানা ছয় বছর বন্ধ ছিল বাম্বী। গতকাল নতুন ছবির শুভমুক্তি না হওয়ায় ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘পরাণ’ ছবি দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্সের। আসনসংখ্যা ১ হাজার থেকে কমিয়ে ১৬০ রাখা হয়েছে। টিকিটের দাম যথাক্রমে ৮০ ও ১০০ টাকা। প্রথম দিনেই ‘পরাণ’ ছবি দেখতে দর্শকের আগ্রহ দেখা গেছে।
এই প্রেক্ষাগৃহমালিক আরও বলেন, আপাতত ১৬০ আসন দিয়ে নতুন আঙ্গিকে বাম্বীর যাত্রা শুরু হয়েছে। দর্শক হলে আসলে এবং ভালো ব্যবসা হলে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র চালু ছাড়াও আসনসংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্সের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভালো ছবি নির্মিত হলে সিনেমা হল হাউসফুল হবে বলে আশা করছি। এ ছাড়া বর্তমানে সিঙ্গেল স্ক্রিন চালু আছে। শিগগির স্ক্রিনসংখ্যা বাড়ানো হবে। এভাবে দর্শক হলে ফিরলে শিগগির আমরা সিনেপ্লেক্সে স্ক্রিনের সংখ্যা বাড়াতে পারব।’

বগুড়া জেলা শহরেই একসময় ১০টি প্রেক্ষাগৃহ ছিল। এখন চালু আছে মধুনবন সিনেপ্লেক্স, সোনিয়া হল ও বাম্বী ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স। সারা জেলায় এ সংখ্যা ছিল ৩৮। তবে জেলাটি সিনেমার সেই জৌলুশ হারিয়েছে অনেক দিন। ভাঙা পড়েছে ৩১টি হল।
একে একে বন্ধ হয়ে গেছে শহরের সাতমাথায় অবস্থিত মাধু ও মেট্রো সিনেমা, মেরিনা টকিজ, কবি নজরুল ইসলাম সড়কে উত্তরা টকিজ, চারমাথায় বীথি সিনেমা, জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্টে সেনা অডিটরিয়াম, মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্টে উল্লাস সিনেমা হল, চকসূত্রাপুর মাসুম সিনেমা হল এবং বনানী সিনেমা হল। মাধু, মেট্রো ও মেরিনা ভেঙে বহুতল শপিং সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক| দৈনিক আজবাংলা

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ