শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এত আস্থা আগে ছিল নাঃ বীণা সিক্রি
নিউজ ডেস্ক:
প্রকাশ: সোমবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৩০ বিকাল | অনলাইন সংস্করণ
এত আস্থা আগে ছিল নাঃ বীণা সিক্রি

ছবি । সংগৃহীত

তিন বছর পর ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের সম্পর্কের বাইরে এই সফরের রাজনৈতিক গুরুত্বও কম নয়। দুই

এখন আমরা দুই দেশ একে অপরকে বিশ্বাস করি। এখান থেকে পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। এখন আমরা দেখি বাংলাদেশের জন্য কোনটা ভালো, ভারতের জন্য কোনটা ভালো। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমরা পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করি। আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নীতি এ ক্ষেত্রে খুবই প্রাসঙ্গিক। এটি আমাদের প্রতিবেশীদের লাভবান হওয়ার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী নীতি।

আপনারা যদি এখন শ্রীলঙ্কার দিকে তাকান, দেখবেন আমরা দেশটির সংকট কাটাতে অনেক কাজ করছি। আমরা ভালো প্রতিবেশী।

আজ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক অনেক খাতে প্রবাহিত। তথ্য-প্রযুক্তি, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ সব খাত এখানে যুক্ত। ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এ সম্পর্ক।

তিন বছর বেশ লম্বা বিরতি। এই সময়ের মধ্যে কভিড মহামারিও ছিল। গত বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী—দুজনই ঢাকা সফর করেছেন। এটি কিন্তু সম্পর্কের গুরুত্বের বহিঃপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের পর চার বছরে সম্পর্কের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আরো অগ্রগতি দেখার অপেক্ষায় আছি।

এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হলো অনেক বছর পর। ইতিবাচক অগ্রগতিও হয়েছে। আমরা আশা করি, কুশিয়ারা নিয়ে সমঝোতা হবে।

আমি অবশ্যই বলব, তিস্তা নিয়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু কেন চুক্তিটি হচ্ছে না তা-ও আমরা জানি। সমস্যাটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের। তারা তিস্তা চুক্তি চায় না। তবে এখানে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, এখন কিন্তু তিস্তার পানিপ্রবাহের পুরোটাই বাংলাদেশে যাচ্ছে। পানিপ্রবাহের পরিমাণ যা-ই হোক।

হ্যাঁ, বৈশ্বিক উষ্ণতাসহ বিভিন্ন কারণে পানির স্বল্পতা আছে। এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ভারতের জন্যও প্রযোজ্য। আমরা তিস্তার পানি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি না। চুক্তি না হলেও বাংলাদেশ তিস্তার পানির পুরোটাই পাচ্ছে।

সত্যি বলতে, এখন আর বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। আস্থার সংকট বা সন্দেহ—এগুলো অন্তত এখন নেই। এর ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে দুই দেশ অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে দুই দেশ ‘সেপা’ নিয়ে অগ্রসর হতে চাইছে। এই সম্পর্ক মডেল সম্পর্ক। অন্য দেশগুলো আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অনুসরণ করতে পারে।

অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব খাতে আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে। আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে সহযোগিতা করছি।

বাংলাদেশ এখন রাশিয়ার তেল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। আমরা জানি, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। আমরা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারি। সহযোগিতার সুযোগ আছে।

আমি এমন ভাবনার সঙ্গে মোটেই একমত নই। রাজনীতি, নির্বাচন—এগুলো পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে ভারতের চাওয়া-পাওয়া, প্রত্যাশার কিছু নেই। বাংলাদেশের জনগণই এগুলো ঠিক করবে। আমরা, ভারত কোনোভাবেই এসব বিষয়ে নাক গলাই না। তবে আমরা আশা করি, বাংলাদেশের জনগণ সফল নির্বাচন পাবে।

নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক খুব ভালো এখন। আগে, বিশেষ করে আমি যখন ছিলাম, তখন এ খাতে সহযোগিতা বেশ কঠিন ছিল। এখন সীমান্ত পরিস্থিতিও ভালো। আমরা সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করছি। কোনো সমস্যা হলে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা করে। সন্ত্রাসবিরোধী সমন্বিত সহযোগিতা আছে।

আমরা এখন সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য বিনিময় করি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরস্পরকে সহযোগিতা করছে। এটা সহযোগিতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। এ কারণে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এত ভালো পর্যায়ে আছে। সীমান্তে অবৈধ কর্মকাণ্ড ঘিরে দু-একটি ঘটনা ঘটে। এর বাইরে আমাদের দুই দেশের সীমান্ত কিন্তু খুব শান্ত।

বাণিজ্য ও কানেক্টিভিটিতে পরিবর্তনগুলো অত্যন্ত ইতিবাচক। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশের জন্য বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। এটি দুই পক্ষের জন্যই লাভজনক সুযোগ।

 আমি স্মরণ করতে পারি, আমি যখন বাংলাদেশে ছিলাম তখন বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ছিল অনেক কম। যোগাযোগেও অনেক বাধা ছিল। এখন আপনারা পরিবর্তনটা দেখতে পাচ্ছেন। এতে বাংলাদেশও কিন্তু অনেক লাভবান হয়েছে। নিরাপত্তা সহযোগিতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য—সব খাতে সহযোগিতা এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখে আমি আনন্দিত।

 

নিউজ ডেস্ক। দৈনিক আজবাংলা

 

« পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ